সেই সীমানা

✍️ সুস্মিতা দেবনাথ

      তখন ভোর ৪টা বেজে  ৩০ মিনিট সেই সীমানায় পা পেলা, সেই জায়গা, যেখানে জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিনগুলো কাটিয়া আসা। আজ অনেকদিন পরে সেই আগের স্কুলে যাওয়া। কতই না স্মৃতি জড়িয়ে আছে ওখানে। পা ফেলতেই মনে হল খুব আপন একটা জায়গা। এক নিমিষে ডুবে গেলাম সেই ছোট্টবেলাতে সেই হাসি খুশির দিনগুলিতে। গিয়েছিলাম জীবনের একটা ধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দৌড়ানোর উদ্দেশ্যে।  অবশেষে উদ্দেশ্য পূরণ, আর সূর্যের আলোয় আলোকিত হলো চারপাশটা। একটু পরেই স্কুল স্টুডেন্টদের আসা শুরু হবে। মনটা আজ ভিষণ হালকা। দুঃখ কষ্ট যেন এক নিমিষেই হারিয়ে গেল কোথাও। দৌড়ানোর পরেই জুতোগুলো খুলে বসে ছিলাম সেই স্কুলের বারান্দায়। যাই হোক জুতোগুলো হাতে নিয়েই যাচ্ছি বাড়ির দিকে। ভাবনা গুলো যেন ফুরাচ্ছে না, হাঁটছিলাম ঠিক আপন মনে, সেই মাঠের ঘাসে তারপর বাড়িতে যাওয়ার পথে আবারো মনে পড়ে গেল সেই রাস্তা সেই বাঁশের জার সেই  ছোট পুকুর, সেই ধান খেতের পাশে নালা,  যেখানে  প্রতিনিয়ত মাছেরা করতো খেলা। স্কুল থেকে বাড়ি যেতে প্রায়ই দেরী হয়ে যেত, তার কারণ ছিল দাঁড়িয়ে থেকে মাছেদের খেলা দেখা, রাস্তার পাশে থাকা ফুল গাছ থেকে ফুল ছেড়া, তখন পার্টিকুলার কোন বন্ধু ছিল না। যে মুহূর্তে ঠিক যার সঙ্গে থাকতাম সেই ছিল বন্ধু আর সেই বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বাড়ি ফেরা হতো । তখন অবশ্য কোন স্বার্থ ছিল না মনে, কোন হিংসা স্পর্শ করিনি তখনও, তাই হয়তো দিনগুলো এত সুন্দর ছিল। হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠতেই বন্ধুর কল কিরে আসবি না আজ কলেজে, কিছুটা থমকে উঠে বললাম হ‍্যা হ‍্যা অবশ্যই আসবো। শুভ সকাল বলে শুভেচ্ছা জানাতেই আমি হেসে উত্তর দিলাম হ‍্যা শুভ সকাল। দশটায় বের হব ঠিক সময়ে বেরিয়ে পরিস। ফোন কাটতেই তাড়াতাডি ছুটে গেলাম বাড়ির দিকে, বাড়ি যেতে হবে ভিষন কাজ পরে আছে যে, সেই যে জীবন সংগ্রাম। এখন যে আমি নেই ছেলেবেলাতে। যাইহোক  ফিরেছিলাম কিছুক্ষণের জন্য তো সেই ছেলেবেলার দিনগুলোতে। বাড়ি ফিয়েই তো আবারো সেই জীবন যুদ্ধ।  লড়াই করে চলেছি প্রতিনিয়ত।  পেরিয়ে  যে এসেছি সেই সীমানা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ