✒️সুখ চন্দ্র মুড়াসিং
একটু বুঝার বয়স হতেই ঋষি বুঝতে পারল সমবয়সীরা তাকে অবজ্ঞা করে , তার সঙ্গে মিশতে ও খেলতে চায়না । দুর্ভাগ্যের বিষয় তার আপন ভাইবোনেরাই এই বিষয়ে অন্যদের উৎসাহিত করে । মা বাবাকে বলেও কোন লাভ হয়নি তাদের মতামত হল - "তাহলে একা একা খেল", একা একা খেলা তো দূর চলাও যায়না এটা কেউ কী বুঝে ? বয়োজ্যেষ্ঠগণের পাশে ঘেঁষতে চাইলে অনেকে বলেন - "এই হাবলা কেবলা তোর এখানে কি ? ,যা নিজের কাজে পাকনা ঢেঁকি" ! বলে তাড়িয়ে দেয়। পশুপাখি ফুলফল আলোবাতাস গাছপালার সঙ্গে সুখ দুঃখের কথা বলে সে দিন কাটায়।
কৈশোরের শুরুতে অনেকই পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়ার ফন্দি খোঁজছে নানা নেশার স্বাদ নিচ্ছে, জীবনসঙ্গী বাছাই করছে,
নিরুপায় ঋষি পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়িয়ে চলছে। যৌবনের শুরুতেই অনেকে সন্তানের পিতামাতা , তারও খুব ইচ্ছা হত নিজের একান্ত মনের মানুষ থাকবে যার হাত ধরে খোলা নীল আকাশ দেখবে ফুলে ফুলে রেণু মাখবে পূর্ণিমার চাঁদ দেখবে তাঁরা গুনবে । কাউকে একটু ভাল লেগে চোখ তুলে তাকালেই কুৎসিত গালাগাল তীর্যক ভাবে ছুটে আসে । স্বপ্ন দেখা ছেড়ে আজকাল মাথা নিচু করে চলাচল করছে তবুও অনেকে মুখচোরা আইব্রু বলে টিটকারী করে ,অনেক উত্তি যুবতী কুষমান্ড বলে ঢলাঢলি করে হাসাহাসি করে। ঋষির , চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে - আমারও মন আছে রূপ যৌবন আছে জ্ঞানবুর্দ্ধি আছে স্বপ্ন সফল করার ক্ষমতা আছে তোমরা কি দেখতে পাওনা ।
ঋষি আজ বড় অফিসার , গাড়ী বাংলো চাকর বাকর পেয়েছেন অধিনস্ত অনেক কর্মচারী স্বসম্মানে চাকুরী করছে কিন্তু গ্রামের লোকজন এবং আত্নীয় স্বজনরা অভাব অনটন জরাজীর্ণ লাঞ্ছনা বঞ্চনা বিনা চিকিৎসায় কাতরে মরলে ও তার কাছে সাহায্য চাওয়ার চেয়ে কেনজানি আজও অবজ্ঞা করতেই বেশি ভালোবাসে।
0 মন্তব্যসমূহ