স্মৃতির ক্যানভাসে

✍️ কলমে - শ্যাম মালাকার

মনে আছে প্রিয় !
কোনো এক পড়ন্ত বিকালে
তুমি আর আমি রবীন্দ্র সরোবরে ।
আজ বিকাল ও একই সময় ও একই ।

আছে সেই বৃক্ষতল
আছে সেই শান্ত তরুদল ।
শুধু তুমি নেই ।
আজ বিচ্ছেদের এতবছর পর -
সে সরোবরের পড়ন্ত বিকেল ,
সেই বৃক্ষতল আর সেই শান্ত তরুদল -
আমাকে কাঁদায় প্রিয় ।
সেই বৃক্ষের কচি পাতা
আর ফুল গুলো আমাকে
কাঁদায় তোমার জন্য ।
আমাকে কাঁদায় ঐ
ঝড়া পাতার দল
তোমার ঐ নরম ঠোঁটের
মিষ্টি আদরের জন্য ।
জানো তো সর্বনেশে
সরোবরের সে বাতাস।
তারাও আজ আমাকে কাঁদায় -
তোমার খোলা চুলের সুগন্ধীর জন্য ।
সরোবরের শতদলেরা
আজ মূর্ছা গেছে ।
কারণ তোমার মতো
কেউ আর বায়না ধরে না -
শতদল দিয়ে কেশের বেশ সাজাতে ।
রতি ক্রিয়াতে মগ্ন সে রাজহংস যুগল-
যারা এক সময়
আমাদের কাছে বসেই -
প্রেমের মোহে যৌবনের সব
সুখ ভোগ করতো ।
আজ সেই রাজহংস যুগলও
আমায় দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
মনে পড়ে প্রিয় -
যে বৃক্ষ আর তরুতলে
আমরা এক থেকে একাকার হতাম ।
সেই বৃক্ষ তরুর মাঝে ছিল -
এক প্রেমিক জোড়া চন্দনী টিঁয়া আর-
নীল শালিকের বাসা ।
তুমি যখন আলতো করে
আমার কাঁধে -
দিতে তোমার মাথা ।
নীল শালিক
আর চন্দনী টিঁয়া যুগল তখন -
ধরতো মধুর সুরে প্রেমের গান ।
কোয়েল তখন আলতো
করে সেই প্রেমের তানে
তাল মিলিয়ে কুহু কুহু কুহু করে-
সুরটি তুলে যেতো ।
আজ তা সবই আছে -
কিন্ত তুমি নেই বলেই
আজ গাছেরা পাখিরা হাঁসেরা
সরোবরের শতদল
আর বাতাসেরা আমাকে
একা করে দিয়েছে।
যেমন টা তুমি করে দিয়েছো ।
না না অভিমানে বলি নাই প্রিয় ।
ভালোবেসে বলছি ,
আমি আক্ষেপ করেই বলছি ।
আজ শুধু তুমি নেই বলেই -
গাছেরা পাখিরা হাঁসেরা
সরোবরের শতদল
আর বাতাসেরা আমাকে
একা করে দিয়েছে ।
জানি তুমি ফিরবে না -
স্বামী সন্তান ছেড়ে আমার বুকে ।
তবুও আমি বারে বারে ফিরে আসি -
এই সরোবরের বুকে পড়ন্ত বিকালে ।
তোমার আমার কাটানো -
সেই সময়কে ফিরে পাবো বলে ।
যখনই আমার চোখ
যায় সরোবরের ঘাসে ।
তখনই তোমার মায়াবী
মুখের সে ছবি ভেসে ওঠে -
স্মৃতির ক্যানভাসে ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ