✍️বিপ্লব গোস্বামী
আলোর উৎসব দীপাবলি।ধর্মীয় নিয়ম মেনে এদিন দীপের আলোয় সেজে উঠে হিন্দু ধর্মের প্রতি বাড়ি।সেই সঙ্গে ধনের দেবী মা লক্ষ্মীর পূজো দিয়ে অলক্ষ্মীকে বিদায় জানানো হয়।অন্ধকার মানেই অলক্ষ্মী আর অশুভ বলে মানা হয় তাই এই দিন দীপ জ্বালিয়ে অশুভ আর অমঙ্গলকে দূর করতে এই উৎসব পালন করা হয়।
সনাতন ধর্ম মতে শ্রীরামচন্দ্র চৌদ্দ বছরের বনবাস শেষে রাবণকে বধ করে সীতাকে উদ্ধার করে পত্নী সীতা ও ভাই লক্ষ্মণকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে এসেছিলেন এই দিনে।সেদিন রামচন্দ্রের আযোধ্যা ফিরার উপলক্ষ্যে গোটা আযোধ্য সেজে উঠেছিলো দীপের আলোয়।সেই তখন থেকেই প্রতি বছর দুর্গোৎসের পরবর্তী অমবস্যা দীপাবলি উৎসব হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
দীপাবলি এলেই সস্তার বিদেশি পটকা,বাজি,ঘর সাজানোর সামগ্ৰীতে ভরে যায় আমাদের স্থানীয় বাজার।অনেক বছর ধরে এভাবেই দীপাবলির বাজারে বিদেশি পণ্য একচেটিয়া ব্যবসা করে আসছে।সস্তায় ও সহজে বিদেশি টুনি,বাজি,পটকা,লাইট আর ঘর সাজানোর সামগ্ৰী পেয়ে কেউই কিনতে চায় না দেশীয় সামগ্ৰী ও মাটির প্রদীপ।এরই জেরে মার খাচ্ছে দেশীয় মৃৎশিল্পীরা।এতে দেশীয় মৃৎশিল্পীরা শুধু মারই খাচ্ছেন না বরং বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় কুটির শিল্প।স্বদেশের স্থানীয় মৃৎশিল্প ও দেশীয় কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদেরকেই।তাই দীপাবলির বাজার করতে গিয়ে টুনি পটকা কিনার পাশাপাশি স্থানীয় মৃৎশিল্পীদের তৈরী মাটির প্রদীপ কিনতে যেন না ভুলি।দেশীয় মৃৎশিল্পকে উজ্জীবিত করতে টুনির সঙ্গে মাটির প্রদীপ জ্বালানোর প্রথাও প্রচলন করতে হবে আমাদেরকেই।
আমরা সবাই জানি আতশবাজীর উদ্ভাবন আমাদের দেশে নয়।বিদেশে পটকা-বাজি তৈরি হয় আর সেই পটকা তারা আমাদের দেশের বাজারে বিক্রি করে অথচ তাদের দেশে দীপাবলি পালিত হয় না।তাই এবার থেকে যেন দীপাবলীর বাজার করতে গিয়ে সস্তায় বিদেশি টুনি,পটকা,ঘর সাজানোর সামগ্ৰী কিনার সঙ্গে আমাদের দেশীয় মৃৎশিল্পীদের তৈরী প্রদীপ কিনে স্থানীয় মৃৎশিল্পীদেরকে উৎসাহ দান করি।এভাবেই আমাদেরকেই স্বদেশের প্রায় বিলুপ্ত বা প্রায় হারিয়ে যাওয়া শিল্লকে বাঁচাতে হবে।স্থানীয় মৃৎশিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশীয় মাটির প্রদীপ কিনে দেশীয় মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার শপথ গ্রহণ করতে হবে। আসুন আমরা একজন প্রকৃত দেশ ভক্ত নাগরিক হিসাবে এবার থেকেই দীপাবলিতে নিজের বাড়িতে বিদেশি টুনির পাশাপাশি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে পালন করি আলোর উৎসব দীপাবলি।
0 মন্তব্যসমূহ