✍️ রাজা দেবরায়
প্রায় সব রাজনৈতিক দলগুলোরই যুবশক্তি বা ইওথ উইং বা সংগঠন আছে। কিন্তু এগুলোতে শুধু রাজনৈতিক চর্চা (সেটাও সঠিকভাবে হয়না) বা কর্মসূচী প্রতিপালনই মূখ্য ব্যাপার থাকে। যুব মানে তো বিশাল কিছু। যুব মানে প্রেম, যুব মানে আবেগ, যুব মানে নতুন ভাবনাচর্চা, যুব মানে নতুন সৃষ্টি, যুব মানে নতুন সংস্কৃতি, যুব মানে নতুন দিশা, যুব মানে নতুন দৃষ্টিকোণ!
কিন্তু এগুলোকে গুরুত্ব দেওয়ার চিন্তাভাবনা কি রাজনৈতিক দলগুলো করছে? মনে তো হয়না! যুবদের মিটিংয়ে কেনো প্রেম, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, সিনেমা, গান ইত্যাদি বিষয় থাকবেনা? এগুলো থাকলে তো এগুলোর চর্চার মাধ্যমে নেতৃত্বরা আগামীদিনের সঠিক, যোগ্য, উৎকৃষ্ট নেতৃত্ব সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কথাবার্তার মধ্যেই সীমিত না রেখে একেক দিন একেক বিষয়ে সবাইকে আলোচনা করতে দেওয়া হোক। তাঁদের কাছে প্রেম আসলে কী, সেটা তাঁরা মন খুলে বলুক। কেনো এই গায়কের গান ভালো লাগে মন খুলে বলুক। কেনো এই খেলা ভালো লাগে বা এই খেলোয়াড় ভালো লাগে বলুক। সাহিত্য, খেলা, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে ডিবেট হোক। ডাটা কালেকশন করে তুলনামূলক বিশ্লেষণ হোক। তবেই তো তাঁদের মনে যুক্তি, দৃষ্টিভঙ্গির খেলা চলবে। বিভিন্ন বিষয়ে বন্ধুত্বমূলক প্রতিযোগিতা হোক নিজেদের মধ্যে। সৃজনশীল উৎকর্ষতা আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসুক এবং বৃদ্ধি পাক তাঁদের মধ্যে। তবেই তো আমরা ভবিষ্যতে দারুণ রাজনীতিবিদ পাবো।
এছাড়া শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হোক। শিক্ষাকে আরো উন্নত করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আলোচনা হোক। যদি ভালো প্রস্তাব পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হোক। এইরকম নানা বিষয়ে আলোচনা, পর্যালোচনার মাধ্যমে জনগণের সুবিধে হবে এরকম বিষয় নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে প্রস্তাব দেওয়া হোক। তারপরে এই যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাবগুলো জনসমক্ষে আনা হোক। রাজনৈতিক স্বার্থে শুধুমাত্র ধর্ণা বা একদল লোক নিয়ে ডেপুটেশন এই জিনিসগুলো এখন মানুষ সেইভাবে পছন্দ করেননা। তাছাড়া এগুলো দেখতে দেখতে একঘেয়েমি লাগে জনগণের। কেনোনা নির্দিষ্ট বিষয়ে এগুলো করার পর আর কিছু জানা যায়না এবং ফলো-আপ করা হয়না। তবে অবশ্যই এইসব নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, গবেষণা, আলোচনা, সমালোচনা ইত্যাদি হোক।
যেকোনো রাজনৈতিক দলেরই মুখ্য উইং হলো যুবশক্তি। ফলে তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সুশিক্ষিত করার জন্য সঠিক অর্থে পদক্ষেপ গ্রহণ করা মূল কর্তব্য অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর। তবেই রাজনৈতিক দলগুলো সত্যিকার অর্থেই সঠিক পথে ধাবিত হবে।
রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে দোষারোপ করার চাইতে গঠনমূলক সুপরামর্শ বা সুচিন্তা প্রদান করলে সেটা জনগণের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য হবে। তবে উপযুক্ত তথ্য, প্রমাণ সহ শাসক দলের বা সরকারের ভুল পদক্ষেপগুলো তো অবশ্যই বিরোধী দলগুলো ধরিয়ে দেবে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে। অনেক সময় আমরা এগুলো দেখেও থাকি।
পরিশেষে এটাই বলার, আগামী দিনে রাজনৈতিক দলগুলো উপযুক্ত নেতৃত্ব উপহার দিক আমাদের। আর শুধু এইটুকুই চাওয়া যে আগামী দিনগুলোতে রাজনীতি একটু হটকে, গঠনমূলক, ইতিবাচক এবং শান্তিপূর্ণ হোক।
0 মন্তব্যসমূহ