একটি পুকুর ও এঁদো ডোবা

✒️চৈতন্য ফকির 

আমাদের যৌথ পরিবারে তখন একটি পুকুর ছিলো।
একটি পানাপুকুর। পানাপুকুরকে আমরা ডোবা বলতাম।
একেবারে এঁদোডোবা যাকে বলে।
ছোটবেলা এই ডোবায় খাবি খেতে খেতে সাঁতার শিখি।

দুপুরে বড়শিতে জিওল ধরি।সকালে ফুলকপি ক্ষেতে
কলসি ভরে ভরে জল এনে বাড়ির দক্ষিণে দিতাম।
ঠাণ্ডায় হাত হিম হয়ে কেটে পড়বে এত শীতল তার জল।
গরমের সন্ধ্যায় পচাজলকেও মনে হতো 
বরফের দেশে স্বান করছি।
শরিকি পুকুরে মাছচাষ হতো।
মাঝেমাঝে মাছশিকার করে
ভাতাভাগি করে কারো পাতে মাগুর তো কারো শিংকইলাঠিগুলো যেতো।তা দিয়েই নানান স্বাদমতো 
রান্না চড়াতেন মা কাকি ঠানদিরা।

পাশের পুকুর ছিলো ঠাকুরদা মন্মথ আর ঠানদি রাণীর।
জলে নামলেই নানান নিষেধ। 
সকল নিষেধ ডিঙিয়ে আমরা মাঝেমাঝে স্নান সারতাম
সিগ্ধ লাগতো শরীর।

এখন আমাদের বাথরুম আছে সেই পানাপুকুর নেই 
এঁদো ডোবা নেই। বুকজলে স্নান নেই। 
মাছ শিকার নেই। যৌথ পরিবার নেই। ফুলকপি ক্ষেত নেই। 

যৌথ পরিবারের সেই সব দিন নেই আছে শুধু 
ভিডাব্লিউ এসের জীবাণুমুক্ত ব্লিচিং পাউডারজল।

নেই সে এঁদো ডোবা ও বিশুদ্ধ পুকুর! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ