✍️ চন্দন পাল
অচিন দেশের প্রজারা ফ্রিতে পাওয়ার জন্য একবার প্রকৃতির কাছে , একবার সরকারের কাছে যায় । একবার নেতাদের কাছে তো আরেকবার কোর্টের দ্বারস্থ হয় । প্রজার কষ্টের শেষ নেই ।
প্রজাকে খুশি করতে শেষপর্যন্ত সরকার ব্যাঙ্কের সঙ্গে বুঝাপড়া করে হিসাব করে দেখলো সবাইকে অন্তত বিশলাখ করে টাকা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা আছে ।
সুতরাং রাজ্যে ঘোষণা হয়ে গেল প্রতিদিন একশো হাজার জনের বেশি লোককে ঐ টাকা একাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে এবং পাঁচ দিনের মধ্যেই সবাই টাকা পেয়ে যাবে।
ঘোষণা শুনা মাত্র মানুষ খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল । শুধু পূর্বায়নের মধ্যে কোন হেলদোল নেই । সে প্রতিদিনের মতোই কর্মকে ধর্ম জ্ঞান করে কাজ করে যেতে লাগলো ।
সন্ধ্যায় বাজারে গিয়ে সে এটি এম থেকে সমস্ত টাকা তুললো । সামর্থ্য অনুযায়ী তা দিয়ে দুতিন মাসের নুন ভাত জল খেতে পারে মতো মালপত্র কিনলো । আত্মহারা ব্যবসায়ীরা কম দামেই মাল বিক্রি করে দিল । সবাই যেন রেস্ট নিতে চায় । ফ্রিতে পাওয়া গেলে আর কাজ কেনো !
সবাই যখন টাকা আনতে ব্যাঙ্কে যায় তখন পূর্বায়ন যায় না । অন্যেরা যখন জিজ্ঞাসা করে তখন সে কোনও উৎসাহ দেখায় না । এমন একটা ভাব যেন না হলেও চলবে ।
পাঁচ ছয়দিন পর মানুষের কাছে টাকা এসে গেল । তারা তাজমহল , সুইজারল্যান্ড দেখতে যেতে চায় কিন্তু ড্রাইভার নেই। প্লেন চড়তে চায় কিন্তু পাইলট নেই । মাটন , কাবাব খেতে চায় কিন্তু রেস্তোরাঁ নেই। নিকো পার্কে চড়তে চায় কিন্তু ম্যশিনম্যান নেই । সন্তান বিডিও গেম, মোবাইল চায় বাবা মুঠো ভরে টাকা দিয়ে দেন । কারণ খেলনা দোকান নেই ।
এইভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর মানুষের ঘরের মজুত খাদ্য শেষ হয়ে এল । এবার মানুষ খাদ্য খুঁজতে খুঁজতে পূর্বায়নের বাড়ি যায় । পূর্বায়ন মানা করে না।সবাই কে যত্সামান্য দিয়ে দেয় । আর মানুষ খুশি হয়ে তাকে মুঠো মুঠো টাকা দেয । পূর্বায়ন সবাই কে বলে এভাবে তো আর বেশি দিন দিতে পারবোনা । একটা বিহিত করতে হবে সবাই কে।
মাসখানেকের মধ্যে সবাই যাঁর যাঁর কাজে যোগ দেয় । পূর্বায়ন সব টাকা আবার এটিএমে নিয়ে রাখে । তার একাউন্ট্ এখন চল্লিশ লাখ টাকারও বেশি শো করছে।