✍️কাজি নিনারা বেগম
সময়টা ছিল প্রায় 1994 আগষ্ট মাসে আমি তখন বারো ক্লাসে পড়ি। হেমন্ত কালে প্রায় যায় শীতের নিমন্ত্রণে মরসুম ফুলগুলো যেনো নেচে উঠেছে । দুপুর বেলা সূর্য দেব কিছুটা দোলা চলে মনটা আনচান করছে । আপন মানুষের আদর সোহাগের জন্য যাইহোক বুকে ভালো বাসা চেপে লোকালয় ভুলে খানিকটা সময় নিজেকে নিজের মধ্যে হারিয়ে গেলাম। আমাদের বাড়ির সামনে মনু নদী বাধ। সুন্দর চৌরাস্তা সামনে দাঁড়িয়ে আছে শ্বশ্মান কালি মন্দির টি। পাশে সীমান্ত ঘেষা মসজিদ জোহরের আযানের মিষ্টি সুর শোনা যাচ্ছে। মনু নদীর উপর বাঁধ খানা শহরের উপর দিয়ে চলেছে পাশাপাশি ছোট একটি পাড়া ঐপাড়াতে শ্বশান মন্দিরের পূজা দেন কাজলীর বাবা ঐদিন টি ঘোর অমাবস্যা ছিল ওনি রাতে পূজা দেবার জন্য ফুল বেলপাতা নদীর পাড়ে জবা ফুল তুলছেন। নদীতে জল তেমন নেই পাশের পাড়ার কয়েকটি ছেলে নদী থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বেচা কেনা করে । নদী অপর প্রান্তে একটি বি এস ক্যাম্প আছে। ওরা প্রায় সময় বৌট দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করা লোকজন যাহাতে না যায় কড়া পাহারায় থাকে। ঐদিন ছোট ছোট বাচ্চারা মাথায় কিছু জিনিস পত্র মানে পণ্যসামগ্রী
করে নিয়ে নদী পার হচ্ছিল অবৈধ ভাবে। এমন সময় নদীর অপার থেকে এক জোয়ান নদীতে উপর থেকে লাফ দিল সীমান্ত বর্তী ছোট ছোট বাচ্চাদের ধরার জন্য। তখনই হঠাৎ মনু নদীর তলদেশে চলে গেল
নদীঅতে মাছ ধরছিল বোবা একটি ছেলে ওর মা আদর করে নাম রেখে ছিল কানু।
ঐ বোবা ছেলেটি তাকিয়ে আছে নদীর জলের দিকে হতবাক ও কাউকে বুঝাতে পারে পারছেনা ওকি করল নৌকার মাঝে দাড়িয়ে একটি বাঁশ বা অন্য কিছু দিয়ে শব্দ করছে ওপার থেকে বি এস এফ এর বাকি জোয়ানরা নেমে এল দৌড়া দৌড়ি করে একে একে নেমে এল। নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি করতে লাগল নিমিষের মধ্যে কোথায় চলে গেল। উপস্থিত সবাই মিলে চেষ্টা করে কিছু করতে পারছেনা। আমি আগে বলে ছিলাম মনু নদীর পশ্চিম বাঁধে র কোনায় শ্বশান মন্দিরছিল জাগ্রত সবার মনস্কামনা পু্র্ন হয়। এমতাবস্থায় পাড়ার বয়োজেষ্ট একজন জেঠু এসে বলল আপনাদের মধ্যে একজন মনূ নদী স্নান সেরে মা কালির মন্দির পূজা দেন। হয়তো সব ঠিক হবে। তাড়াতাড়ি কোলকাতা একজন সৈনিক স্নান সেরে পূজা দিতে বসে গেলেন
যথারীতি সময়ে পুজা শেষ হলো। আর এদিকে নদীতে খুঁজা খুঁজিতে কিছুটা হয়রানি হয়ে গেল। আমরা সবাই দাড়িয়ে দেখছি। এমন সময় একজন সৈনিক চিৎকার করে উঠল মিল গায়া মিল গায়া সবাই হকচকিত সাথে সাথে ওই সৈনিক কে জল থেকে কয়েক জন সাধারণ লোকজন সৈনিক রা জল থেকে ধরাধরি করে উপরে উঠালেন। সৈনিক দের মধ্যে একজন মেডিকেল অফিসার ছিলেন ওনি লাশের হাত ধরে কিছু পরিক্ষা করলেন বললেন নেই। কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিস আসল নিয়ে গেল হাসপাতালে ডাক্তার বললেন জল খেয়ে ছেন জল বেড়ে হল সুস্থ হয়ে যাবেন। সবাই খুব খুশি যথারীতি সৈনিক টিকে নিয়ে আসলেন ক্যম্পে। ঘটা করে আবার অমাবস্যায় শ্মশান কালি মন্দিরে পুজা হল পাড়ার সবাই মিলে। আমি আবার বলছিবিশ্বাস করলে ঈশ্বর আললাহ ভগবান মানবকল্যাণে সহায়তা করেন। ঐদিন শ্বশান মন্দিরকে জাগ্রত বলে জানে।
এদিকে বিএস এফ কোম্পানি তে কয়েকজন মাইনরিটি জোয়ান জম্মা বার ছিল দলবদ্ধ হয়ে শ্বশান মন্দিরের খানিকটা পেছনে মনু নদীর বুকে পশ্চিম পারে একটি জামে মসজিদ আছে নামাজ আদায় করেছিল ঐ বিএস এফ জোয়ানের জন্য অনেক দোয়া করেছিলেন সবাই আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহের বানিতে ঐ যাত্রা বেঁচে গেলেন ঐ জোয়ান মায়ের কোলে ফিরে গেলেন।
0 মন্তব্যসমূহ