✍️বিউটি কর্মকার
একসময় ভেঙে পড়লাম আমি। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছে সারা শরীর। চিৎকারের শব্দ আশেপাশের সকলের কানে গেলেও কেউ এগিয়ে আসলো না। একজন অল্প জল ঢেলে দিল ভাঙা পা টার উপর। মনে হল একটু স্বস্তি বোধ হচ্ছে। তবু যন্ত্রণা তো কমার কোনো লক্ষণ নেই। এভাবে কেটে গেল আরো দু তিন ঘণ্টা। এখন আর কাউকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছে না। প্রত্যেকেই বুঝি নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। অথবা আমার উপস্থিতি বুঝি বড়ই ব্রাত্য। তাই যেভাবে হোক জঞ্জাল টাকে সরাতে পারলেই বাঁচে। কিন্তু আমার কষ্ট বোঝার অনুভব বুঝি কারো নেই। এদিকে তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। আচ্ছা, এভাবেই কি শেষ হয়ে যাব আমি? আর বুঝি নতুন দিন দেখতে পাবো না। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে কখন যে অজ্ঞান হয়ে গেছি জানি না।
ঘুম ভাঙলো কিছু অপরিচিত গলার শব্দে। চেয়ে দেখলাম হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা। আমার চিকিৎসা করা হয়েছে। ওরা আমাকে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করছে, "আহারে। এই অবলা প্রাণীর উপর দিয়ে যে বাইক নিয়ে যায়, সে কি মানুষ! ছিঃ!"
হ্যাঁ। সত্যি হয়তো মানুষ নয়। আবার মানুষ। আসলে এখন যে চোখের সামনে মানুষকে দেখছি। প্রকৃত মানুষ, অথবা মানুষরূপী দেবতা।
বেশ কিছুদিন থেকে পুরোপুরি সেরে উঠলাম আমি। মনে হচ্ছিল এদের কাছেই সারাজীবন থেকে যাই। কিন্তু না। আমি যে পথের কুকুর। পথই আমার আশ্রয়। এই মায়ার পৃথিবীতে একবার মায়ায় জড়ানো, আবার একবার হৃদয় ভাঙার খেলা চলতে থাকে। জীবন বুঝি এমনই। আমাকে আবার আমার পুরানো জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হল। আমার চোখের কোলের জল তখনও টলমল করছে।
0 মন্তব্যসমূহ