অপচয়

    ✍️ সুস্মিতা রায়

জীবন এমন কিছু মূহুর্ত উপহার দেয়
যেখানে পেয়ে হারানোর ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে দুনিয়া,
ব্যক্তি - বস্তু সবকিছুতেই এক অপার মোহ
অথচ সময়ের ব্যবধানে নির্লিপ্ততা এসেই যায় !
স্মৃতিপটে জলছাপের মতই বিন্দু বিন্দু আস্কারা
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ঠোঁটে মৃদু কম্পনের বাহাদুরি,
কখনো কোনো উদাস দৃষ্টিতে দু'এক পশলা বৃষ্টির ঘুম
ভিন্ন নান্দনিক দর্শণে জীবন যেন সমৃদ্ধ !
অস্থিরতা জীবনের ধর্ম -----
একে নিয়ে শোক মানানো আদ্যোপান্ত বৃথা।

বৈশাখী সংখ্যা

প্রকাশিত হল বৈশাখী সংখ্যা

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়................................✍️

বৈশাখ মাস আসলেই বিশ্ব কবিতার যেন একটা গন্ধ গন্ধ ভাব আসে। কবিতার গন্ধ ছড়িয়ে দেয় বিশ্বের নানান জায়গাতে। হবেই বা না কেন! এই মাসেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহা আবির্ভাব। এই মাসে কালবৈশাখী ঝড়ের মতো আমাদের মনের মনিকোঠায় যেন কবিতার ঝড় উঠে। কবিতা এবং নানান বাস্তব-অবাস্তব গল্প ভীড় ভীড় করে। অসীম ঝিরিঝিরি সারাদিনের বৃষ্টিতে গৌতম ঘোষালের বৃষ্টির গানটি মনে পড়ে-
"তুমিও কি আমাকে ভেবেছো আনমনে?
এমন শ্রাবন দিনে, এই ভিষণ প্লাবনে!
হয়তো কোথাও আছো তুমি" 
ঠিক তেমনি প্রত্যেক পাঠক এবং রচনাকারের মনে এই বিশাল স্মৃতি এসে মাথাচাড়া দেয় আর রচিত হয় রোমাঞ্চকর কাব্য। এই 'বৈশাখী সংখ্যা' প্রকাশে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছে পান্থ দাস( নবোন্মেষ আহ্বায়ক), সঞ্চয়িতা শর্মা( নবোন্মেষ সদস্যা), সুমিতা স্মৃতি( নবোন্মেষ কনভেনার), শিবশংকর দেবনাথ( নবোন্মেষ সহসম্পাদক) এবং নবোন্মেষ কমিটির অন্যন্য সদস্যবৃন্দ। তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং শুভ কামনা করি। ধন্যবাদান্তে------
গৌরাঙ্গ সরকার
সম্পাদক, নবোন্মেষ পত্রিকা
শিবশংকর দেবনাথ
সহসম্পাদক, নবোন্মেষ পত্রিকা

বৃষ্টি

   ✍️ অভিজিৎ সরকার।

প্রতিদিনের মত আজও ঘুমাতে যাব। 
ঠিক এমন সময় আকাশ তার রূপ টি পরিবর্তন করে।

বুঝে উঠতে পারছিলাম না কেন?
সুন্দর আকাশ টা ধীরে ধীরে কালো হতে লাগল।

আমিও বিছানায় আশা মাত্রই ঝর ঝর করে নেমে গেল।

খুব আনন্দ সহকারে শুনছি বৃষ্টির সেই সুমধুর শব্দ।

এমন সময় আমার মনের ঘরে, এল একরাশি স্তৃতি/কল্পনা।

আমিও সেই কল্পনায় ডুবে বর্তমান ভুলে গেলাম।

সেই ছোট্ট বেলায় বন্ধুদের সাথে একসঙ্গে বিঝতাম সবাই।

ভুলে যেতাম বাড়িঘর "মা" তাড়া করে নিত।

বৃষ্টির সময় বের হতাম আর শেষে ফিরতাম।

পিছন পানে মা ডাকত, কিন্ত কে শুনে মার কথা।

শুধু তাই নয়, অনেক দুষ্টুমি করতাম।


জানি না আজ এমন কি হল,
ঐ দিন গুলি খুব খুব মনে পড়ছে।

আজ মা ও বারন করে না।

আজ অনেক সুখ দুঃখের মাঝে আটকে গেল এই জিবন।

কেউ করে না তার সন্ধান।

কত স্নেহ, ভালবাসার অভাব, কাওকে বলে বুজাতে পারব না আজ।

জানি না, কেন?

হারিয়ে গেল সেই অমূল্য দিনগুলি , কোথায় পাব?

যেখানে ছিল মার স্নেহ, ভালবাসা , আর অজানা আনন্দ।

রণক্ষেত্র

    ✍️ সংহিতা চৌধুরী

যুদ্ধ! যুদ্ধ! যুদ্ধ! 
আর কতো হতে পারে যুদ্ধ? 
এবার তো থামতে হবে, পৃথিবী হয়েছে অশান্ত। 
মায়ের বুক একে একে খালি করা, সেটাই কি যুদ্ধ? 
স্বভাবজাত না পাল্টালে, বোমা বারুদ হবে না বন্ধ। 
পৃথিবীর বুক উঠেছে কেঁপে, রক্তের ঝর্ণা বইছে দেখে, 
বুকে আর্তনাদ, বিপর্যস্ত সমাজতন্ত্র, কন্ঠরুদ্ধ সমস্ত প্রান্তরে। 
কে জানতো একদিন এইভাবে পৃথিবী উঠবে কেঁপে! ধরাতলে সত্য মিথ্যার জালে? 
রুশের চোখ এখন রক্তশূল, দাবানলের আগুনে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। 
সবেমাত্র পা রাখা কলেজের ছাত্ররা, পাড়ি দিয়েছে ইউক্রেনে। 
রক্তে রক্তাক্ত গোলাবারুদের মাঝখানে, কতো শতো নবীন ঝরে গেলো রুশের হিংসাস্তুপে। 
রুশ বাহিনীর মিসাইল হামলা পরিনত হচ্ছে ধংসস্তুপে। 
এসেছো একা,যেতে হবে একা, তবে কেন সাম্রাজ্য নিয়ে এতো কথা? 
ক্ষয়িষ্ণু নয় ইউক্রেন, বিদ্যুতের ঝলক চোখেমুখে। 
বিশ্বজুড়ে প্রতীক্ষিত, অন্যায়ের বাঁধ ভাঙ্গবে কবে? 
মেশিনগানে খসে যাওয়া বুকের মাংস, পৃথিবী দেখছে মানুষের গলিত অংশ। 
কফিন ভর্তি মৃতদেহের ভীড়ে, পৃথিবীবাসীর চোখ হতাশার নীড়ে। 
সীমান্ত নিয়ে যুদ্ধ, আর চলবে কতোদিন? 
সমাজ কালো ধোঁয়ার সাথে লড়াই করছে প্রতিক্ষণ। 
বন্ধ করো তোমাদের আস্ফালন, তোমাদের লম্ফ ঝম্ফ। 
বন্ধ হোক তবে এই প্রতিহিংসার অভিমান, আর যুদ্ধ নয়! 
বাঁচতে দাও তোমরা এই বিশ্ববাসীকে! করছে সবাই শান্তির আহ্বান। 
নীরব সাক্ষী হয়ে উঠবে ইতিহাসের নুতন পাতায়।

তোমাকে দেখব বলে

   ✍️  রূপক পোদ্দার 

কত বর্ষায় রঙধনু উঠেছে আমি তাকাইনি চোখ তুলে শুধু তোমাকে দেখব বলে। অনেক হেটেছি মরিচিকা পথে তোমার পথের পথিক হয়েছি পথ ভুলে, কত বর্ষার জলে স্নান করে জলে খেলা করেছি কিছুই পাইনি তাতে।

             °°°°°

কষ্ট

   ✍️ দেবলীনা ভট্টাচার্য্য

একা একা বসে থাকলে অনেক কষ্ট আসে  ,
কষ্ট পাওয়া স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভাসে ;
 কষ্টগুলো ভেসে ওঠে মনের ক্যানভাসে।
তবুও মানুষ কষ্টকে কেন এতো ভালোবাসে ?

ভালোমন্দের দন্দ্ব গেছে আবেগে মিশে ,
সরল মনটি ঠকেছে যে মানুষকে ভালোবেসে।
কিছু কিছু কথা আছে যা বলতে পারিনা,,
এমন কিছু কষ্ট আছে যা আমি সইতে পারিনা। 

কষ্ট গুলো আপন মনে একলা গেঁথে রাখি। 
হাজারও দুঃখের বেদনা মনে ধরে থাকি
কেমন করে কাটছে দিন নাওনা একটু খোঁজ,
দেখবে তোমরা আমার মনে অনেক কষ্টবোধ ,

হারিয়ে গেছে আমার অনেক কিছু,
চাইনা আর আমি খুঁজতে 
তাইতো এখন আমি চুপ থাকি,
সব কষ্টের মাঝে ।।

গ্রীষ্মের দাবদাহে

    ✍️ পাপিয়া দাস

বসন্তের শেষে 
গ্রীষ্ম তুমি এলে।
প্রচন্ড  দাবদাহে 
তপ্ত হাওয়া বয়ে  চলে।

পুকুর  কিংবা নদী 
শুকনো মাঠ ঘাট।
ধান ক্ষেতে জল নেই
মাটি  ফেটে ভাগভাগ।

শুষ্কতার মাঝে
গুনছে  দিন মানুষ,
ধরনীর বুক কবে হবে সিক্ত 
বর্ষার বর্ষণে।

কবে আসবে বর্ষা
ডুবে যাবে  ধরাতল 
আনন্দে নাচিবে  গাছগাছালি।

গ্রীষ্মের শেষে
বর্ষার বর্ষণে 
শুষ্কতা চিরে 
তপ্ত হাওয়া যাবে দূরে সরে।

সৈনিক

   ✍️ শতাব্দী দেবনাথ

 ওরা বারুদ গন্ধ গায়ে মাখে 
নেই তাদের লেলিহান শিখা, 
বাড়ানোর কোনোও পুরোহিতের হাত, 
কাঁটা তারে আটকে শত শত দেহ 
 যা টিভির পর্দায় কখোনো আসে না। 
হারিয়ে যায় কত মায়ের সন্তান 
রক্তে মাখা কাপড়ের টুকরো গুলো 
যেন মায়ের চোখে ঝলসে উঠে। 
সৈন্যদের কোনো খাবার নেই 
শুধু গরম গুলি বিদ্ধ হয় বুকে। 
তুমি মাংস ভাত পেট পুরে 
ফেসবুকেতে স্লোগান দাও, 
যুদ্ধ চাই !যুদ্ধ চাই !
প্রাণের খেলা খেলছে ওরা প্রতিনিয়ত, 
অনুভব করো তাদের প্রতিটা ক্ষণ, 
যারা চাইতো না যুদ্ধ হোক।।

মায়ের সার্টিফিকেট

   ✍️ প্রসেনজীৎ সাহা

অদিতির বিয়ে হয়েছে আজ আট বছর হলো। অদিতির ছেলে রিদ্ধিমান এর আজ প্রথম স্কুল।অদিতি আজ সকাল থেকে খুব ব্যস্ত। সকাল থেকে রান্নাঘরে গিয়ে সকলের জন্য আলাদা আলাদা জলখাবার তৈরি করছে সে। শ্বশুর মশাইয়ের মিছরির জল, স্বামীর জন্য কফি, শাশুড়ি মায়ের ঘন করে দুধ চা, সব‌ই একা হাতে তৈরী করছে সে, ওইদিকে আবার ছেলেকে স্কুলের জন্য তৈরী করতে হবে, স্বামীর অফিসের টিফিন গুছাতে হবে। এ সব কিছুই যেন তার দায়িত্ব। অদিতি যেন এই পরিবারের ব‌উ নয়-একটা টাইম মেশিন। সকাল থেকে এত কিছু করার পর যখন ডাইনিং টেবিলে জলখাবারের মধ্যে চিঁড়ের পোলাও তে লবন কম হয়েছিল তখন কেউ তাকে কটু কথা শুনাতে ছাড়েনি। এইটা অদিতির জীবনে নতুন ঘটনা নয়, আটবছরে বহুবার শুনেছে সে এই কথা গুলো। তবুও সে কিছু বলে না, সে মনে করে তার ছেলে বড় হলে তার সব দুঃখ দূর হবে। এইভেবে সে ছেলেকে বড় করতে থাকে। আজ তার ছেলের আটাশ বছরের জন্মদিন, সে এখন একজন সরকারি অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মী।তার জন্মদিনে এসেছে বহু মানুষ যারা খুবই শিক্ষিত। সেখানে অদিতি অনুষ্ঠানের সব খাবার তৈরি করে ছেলের জন্মদিনের কেক কাটা দেখবে বলে সাধারণ ভাবে সে সবার সামনে চলে আসে। যখন তাকে দেখে সবাই রিদ্ধিমান কে জিজ্ঞাসা করছিল যে ইনি কে ? তখন রিদ্ধিমান বলে ইনি হচ্ছেন আমাদের বাড়ির আশ্রিতা মহিলা, ওনার স্বামী-সন্তান ওনাকে পছন্দ করেন না,তাই ইনি আমাদের বাড়িতে থাকেন। ছেলের মুখে এই কথা শুনে অদিতি আর নিজেকে আটকাতে পারেননি। সে সবার সামনে ছেলের গালে সজোরে একটা থাপ্পর মারে। ছেলের মুখে বাজে কথা সে অনেক শুনেছে, কিন্তু তবুও ছেলের গায়ে কখনো হাত তুলে নি সে। কিন্তু তার ছেলের থেকে এরকম সার্টিফিকেট পাবে সেটা সে কখনো কল্পনাও করেনি হয়তো। অদিতির এখন মনে হচ্ছে তার শ্বশুর মশাইয়ের কথাটাই ঠিক, ওনি বারংবার বলতেন যে "রিদ্ধিমান আমাদের যোগ্য উত্তরসূরি,ওর শরীরে এই পরিবারের রক্ত ব‌ইছে।" আজ সেটা অদিতি স্পষ্ট দেখতে পেল। সেইদিনের সেই ঘটনার পর অদিতি পরদিন সকালে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়, তখন সবাই ঘুম থেকে উঠে হাতের কাছে কিছুই তৈরি পায় না আর। কারণ তাদের বাড়ির সেই আশ্রিতা টাইম মেশিন অদিতি নামক মানুষটি যে আর নেই এই বাড়িতে।।

বসন্তে রবি

    ✍️ শাশ্বতী দেব

বসন্তে ছিলে তুমি মাতৃগর্ভে ,
জন্মেছিলে একদিন জোড়াসাঁকোতে ৷
রেখে গেলে নাম তোমার অমর  করে ,
গান, কবিতায়, গল্পে —সমাদৃত হলে ,
তোমার গান কবিতায় কীর্তি রেখে গেলে ৷
বৈশাখের পূণ্যলগ্নে করি তোমায় স্মরণ ৷
তোমার কবিতা গানে ,করি তোমায় বরণ ৷
...............................

বিরহ

   ✍️ অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী

তুমি যখন আমার কাছে এসেছিলে ছুটন্ত ট্রেনের মতো ধূম্রমেঘের গতিতে। 
চারিদিকে তখন আনন্দের বাতারবণ 
মাতাল হাওয়ার আলিঙ্গন দেহের মাটিতে। 
হাতে হাত রেখে হৃদয়েতে মাথা পেতে 
কথা দিয়েছিলে তুমি সেই রাতে। 
জীবনের প্রতিটি স্টেশনে থাকবে তুমি সাথে। 
অহঃনিশি পাড়ি দেবো তেপান্তরের মাঠে।। 
আজ কেন মাঝপথে পাথর লোহার পিঠে রুদ্ধ  নিরেট চাকা। 
হঠাৎ কেন থেমে গেলে সম্পর্কের মাঝে দিয়ে তুমি ছ্যাঁকা।। 
স্টেশন মাস্টার আছে বসে 
আসবে তুমি ঝড়ের বেগে। 
প্রতিক্ষার কালের শেষে
 অবুজ মন আমার গেলো রেগে।। 
শূন্য স্টেশন আর আমি সেই প্রথম পাগলামি। 
ভাবলাম তুমি বানিয়েছ বোকা বাসে করে গিয়েছ একা।। 
কিন্তু ঘরে ফিরে দেখি....... 
রুদ্ধ দ্বার আর তীব্র হাহাকার ।। 
স্টেশন ফিরে দেখি আরবার। 
রেলের পাটাতন জুড়ে বিরহের অনুতাপের শব্দহীন চিৎকার।। 
জীবনের শেষ স্টেশনেও তুুমি
 আসলে না ফিরে আর। 
শূন্য হৃদয় তোমার বিরহে 
পেয়েছে মুক্তির দ্বার।। 

নারী

    ✍️ অর্পিতা পূজা দাস

ওহে নারী!তুমিই  কোমল  পদ্ম,মসৃণ  মধুর সুগন্ধিত ফুল।
তোমারি সুগন্ধ ছড়ায় প্রকৃতির অনুকূল। 
তুমিই রূপের ঝর্ণার আলো চারিদিকে দীপ জালো। 
তুমিই বিধাতার সেই অমূল্য সৃষ্টি, 
যাকে জুড়ে নতুন প্রজন্ম পেয়েছে দৃষ্টি। 
তুমিই কি সেই দশভূজা নারী? যে একহাতে সামলাই সংসার এর প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি। 
যেমনি রাঁধ; তেমনি চুল বাঁধ! 
নেই কোনো অভিযোগ না আছে অভিমান তাকালে 
দেখি আছে শুধু 
মায়ার বাঁধনে জড়ায় তোমার ওই দুটি নয়ন 
আর স্নেহের  ভালোবাসার অফুরন্ত প্রদীপের শিখা। 
তোমার নেই বুঝি কোন আবদার? 
তুমি ঠিক আমার মায়ের মত 
তবে কি নারীর আছে কোন অদৃশ্য রূপ। 
কেউবা চিনেছি তোমায় তার জন্মদাত্রী মা বলে। 
কেউবা দিয়েছে তোমায় প্রিতৃ পরিচয়। 
কেউবা গ্রহণ করেছে তোমায় তার অর্ধাঙ্গিনী রূপে। 
বেলা যে যায় বয়ে ক্ষণে ক্ষণে 
তেমনি তুমিও নিজেকে রাঙাও নতুনের সন্ধানে। 
কিন্তু তুমি কি সেই নারী? 
কি তোমার আসল পরিচয়? 
তুমি সেই সূর্যের আলো, যা মেঘ বর্ষায়ও নিজের প্রকাশ জ্বালো। 
তুমিই সেই শীতল হাওয়া, যা গ্রীস্মের রোদ্দুরেও মেজাজের ভাব উল্টে দিয়ে করো মন মাতোয়ারা। 
হে নারী আমি চিনেছি তোমায়! 
তুমিই অমাবস্যার চাঁদ হয়ে 
জোছনা ছড়াও প্রাঙ্গণে। 
তুমিই নতুন প্রজন্মের দেবী দুর্গা,  বিপদকে করো সংহার! 
তুমিই পার্বতীর মাঝেই শ্যামা কালী কার রূপ। 
তুমিই  বিদ্যা, জ্ঞান, মধুর সুরেরও দেবী সরস্বতী। 
তুমিই  দিন দুখিনির অনাহারে 
পাশেই থাকা দেবী অন্নপূর্ণা। 
তুমি ভালোবাসার ভান্ডার, তুমিই রূপে দেবী লক্ষ্মীর আকার। 
 তৃষ্ণারও তেষ্টা তুমি
নেই কোন পরিমাপ ধারণ 
নিজেরে জন্ম দিলে সিদ্ধ করতে পরের ও সাধন। 
প্রকৃতির সৃষ্টি তুমি অনন্যা 
তুমি অদ্বিতী

ভাষিক ষড়যন্ত্রের পথে দেশ : রুখে দিন হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ

    ✍️ তুহিন ভৌমিক 
----------------------------------------------------
২০১৯ এর ২৮ শে মার্চের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে স্থগিত জনগণা আবার শুরু হচ্ছে। এবারই প্রথম আপনার মাতৃভাষা সাথে সাথে আরো দুটো কী কী ভাষা আমরা জানি তা জানতে চাওয়া হবে। এটা  একটা দীর্ঘমেয়াদী নিঃশব্দ  ষড়যন্ত্রের শেষের ধাপ । বলিউড, কার্টুন, ক্রিকেট ধারাভাষ্য দিয়ে এতো বছর ধরে আমাদের হিন্দি গেলানো হয়েছে। এবার জানতে চাওয়া হবে আপনি মাতৃ ভাষা ছাড়া আর কি কি বোঝেন। স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ, বিশ্ব মানব এবং গোবলয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করা লোকজন দুটো ভাষার মধ্যে একটা অবশ্যই হিন্দি বলবে। এরপরই শুরু হবে খেলা, পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলা হবে ভারতের বেশিরভাগ মানুষই হিন্দি বোঝে তাই সংযোগরক্ষাকারী ভাষা( রাষ্ট্র ভাষার নামান্তর) হিসেবে হিন্দিকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো এবং সেটা হবে ২০২৪ সালের আগেই।

এখন মনে হতে পারে হিন্দি সংযোগরক্ষাকারী ভাষা হলে সমস্যা কি? সমস্যা হলো সেখানে বিদেশী ভাষার নাম দিয়ে ইংলিশের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হবে। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, ট্রেন, কাস্টমার কেয়ার সেন্টার, সর্ব ভারতীয় সমস্ত পরীক্ষা সহ সব একমাত্র হিন্দিতেই হবে। তাতে লাভবান হবে এক ও একমাত্র গোবলয়ের বাসিন্দারা, ৫৫% শতাংশ অহিন্দি জাতির মানুষ হবে বঞ্চিত এবং আপনি আমি হবো দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। আপনি মাতৃভাষার জন্য আজ যে আন্দোলন করছে সেটারও আর ধার-ভার থাকবে না। স্বাধীনতার সময় থেকে আজ পর্যন্ত যে হিন্দি বিষ ঢোকানো চলছিল, তা সম্ভবত পরিণতি পেতে চলেছে।
উপায় একটাই, যে ভাষার কথাই  বলুন কোনোভাবেই হিন্দি বোঝেন, বলবেন না এবং সেটা যেখানে লেখা হবে তার ছবি তুলে রাখুন। অহিন্দিভাষী যে সব মানুষ জনগণনায় কাজ করবেন তারাও সতর্ক হন।

আমার সমস্ত বন্ধুদের অনুরোধ করবো এটা কপি পেস্ট করে ছড়িয়ে দিন, বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনকে সচেতন করুন, চায়ের দোকান সেলুনে আলোচনা করুন। আটকাতে আমাদের হবেই।

ধাপ

    ✍️ আলমগীর কবীর 

পৃথিবীর প্রতিটা মানুষেরই জীবনের বিভিন্ন ধাপ পেরুতে হয়
যেতে হয় আপনজন প্রিয়জনদের থেকে কিছুটা দূরে! 
সেই দূরত্বটা স্থান পরিবর্তন তাই বলে বিচ্ছেদ নয়!
নয় হৃদয় থেকে মুছে দিয়ে ভুলে যাওয়া!  
আমারও যেতে হবে তাই চলে যাবো, এটা জীবনের প্রক্রিয়া!
তবে যাদের রেখে যাবো, ফেলে যাবো কোথাও তারা সর্বদা আমার হৃদয়েই থাকবে! 
আমার মনে দাগ কাটবে,  হয়তো ভিষণরকম কাঁদাবে!  
তবুও যেতে হবে, যেতে হয়,  এটা যে জীবনের ধাপ, এটা যে  চিরসত্য এক জীবন প্রক্রিয়া!

মানুষ

   ✍️ রাহুল দেবনাথ

এক যে ছিল মানুষ,
আবৃত মুখমন্ডল মুখোশ দ্বারা।
অনাবৃত হয়তো চরিত্র!
এ কেমন তুমি আধুনিক,
তুমি না শিক্ষিত ?
তাহলে পাশবিকতার চাষ কেন ?
রহস্যের নিকেতনের ন্যায় ঋতুবদল!
মুখোশধারী তো তুমি প্রকৃত থেকেও বেশি!
ক্ষোভ,বিদ্বেষ, হিংসা, পেরিয়ে
মান-হুশ মিলিয়ে নিজেকে বিচার করো।
ভাটার টানে সময় ফুরালেও
মানুষ তোমরা মানুষ হও।