মেঘলা সময়ে

   ✍️  গৌরব নাথ

নৌজোয়ান মনন শিল্পে ভাস্করের মধ্যে
হয়ে ওঠে এক গম্ভীর রূপক শিল্পী;
সায়হ্নের আবছায়া আলোর শরীর,
কারুর আপন সঙ্গী হয়, ন্যাসপালের আড়ালে।

বৈকালিক ডাইরির অদৃষ্ট চিত্রলিপিতে দেখা যায়,
ডাউক যাচ্ছে সমীরণের বিরহে কোনো এক নীড়ে;
কারুর ভালোবাসার রোদ ডুবে প্রেম বিনোদনের রাতে,
হাতেখড়ি হয় সদ্যজন্মা প্রেমিকের।

মেঘ মেদুর নুমনায় আসন্ন নির্বাচিত নির্বাসনে,
ফোঁটা বৃষ্টি আসবে বলছে খানিকক্ষণ পরে
আমাকে ভেজাতে শেষমেশের সমুদ্রে;
সাথে আসবে শো- শোয়াশো এর ভীতি নিয়ে মেঘমন্দ্র।

সমুচিত জবাব

    ✍️ অনুকূল দেবনাথ 

হে যুবক নব ভারতে দিশারী তুমি
এক অনন্য নক্ষত্র তুমি।
তুমি আছো কাজে অবিচল
সব ভাবে তুমি-ই  নিশ্চয়। 
বুকের পাটা কাকে বলে?
দেখিয়ে দাও কার্যক্রমে।
ভারত মায়ের বীর সন্তান
তোমায় জানাই শত প্রণাম।
তুমি এগিয়ে যাও ভাই আছে সাথে সবাই
তোমায় সবাই নিয়ে যাবো জগৎ সভায়। 
আজ যেদিকে চাই শুধু প্রতিবাদ পাই
যুবক ছাড়া মোদের বিকল্প নাই।

ভাবো

    ✍️ সুস্মিতা সরকার

নারী বলে ঘৃনা কর 
ঘৃনা কর মাকে ?
ঘৃনা যদি করতে হয় 
কর শুধু নিজেকে ।
ভুলে কি গেছো তুমি            
জন্ম তোমার কার গর্ভে ?
সন্মান করো নারী জাতীকে 
যে জন্ম দিয়েছে তোমাকে । 

অচেনার ভীড়ে হারাই না আর

    ✍️ সুজন দেবনাথ

অচেনার দেশে কত শত মুখ
আমারে ডাকিয়া কহে,
পথিক তোমার পথ ভুলেও
এতো হাসি কেন বহে?

একগাল হেসে বলিতাম আমি
এইতো পরম সুখ,
আমার মতো তুমিও হাসো
কেটে যাবে সব দুখ।

পথ তো আমি সেদিন ভুলেছি
ধরনী নিয়েছে কোলে,
যত দুখ তাই আর কিছু নাই
সবই যেন গেছি ভুলে।

আজ আমি তাই যেই পথে যাই
সবই যে লাগে চেনা,
অচেনার ভীড়ে হারাই না আর
নেই কোনো লেনাদেনা।

বিষ্ফোরণ

   ✍️  অভ্রজিৎ দেবনাথ

এই দিনটি বেছে নিলাম
স্মরনীয় করে রাখতে,
তুমি প্রস্তুত, উঠে দাঁড়াও
বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে

কাছে এসো ,
তোমার চোখে দেখেছি জ্বলন্ত সক্রেটিস;
মতবিনিময়ের সময় নেই
আমি বিষ্ফোরণ দেখেছি
প্রচন্ড অগ্নিকাণ্ড তোমার জন্য প্রতীক্ষামান,
ভয় নেই,
কমবয়সী বিপ্লবীরাই বেশি বোমা ফাটায়।

নষ্টনীড়

    ✍️ সামিন শুভ

আমার আশপাশটা ভীষণ খালি
দুর্বিষহ , বিষ্ময়ে তাকিয়ে থাকে চোঁখ
অন্ধকার আকাশে, দূরে ।

আমার আশপাশটা ভীষণ খালি
রাত কাটেনা, অচেতন আনচান মন,
ভীষণ মাথা ঘুরে।

আমি খালি ভীষণ একা, ভাঙ্গা কাঁচ
ভুল করে ভীড়ে আসা বাংলার পাঁচ
আমার চারপাশে শুধু ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক
পাঁজরের ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লাঞ্চনা, অপবাদ।

আমার বুকটা দীর্ঘশ্বাসে ভরে ফুলে আছে
নিশ্বাস ফেলতে পারছিনা,প্রচন্ড রকমের
অদ্ভুত যন্ত্রনা, ধোঁয়াছে।

আমার নষ্টনীড়ে প্রেম নেই ভালোবাসা নেই
কিচ্ছু নেই, আছে শুধু ছাই ছাই আর ছাই,
পিছুটান আর নেই, এগিয়ে যাওয়ার পথ নেই,

স্বপ্নের কঙ্কালগুলো পিছু ধাওয়া করে রোজ
ভয় দেখায়।বেঁচে থাকার ভয়।

এতো এতো যন্ত্রণা তবু চোখে অশ্রু আসেনা। 
চোখে আর জল নেই। 
ইচ্ছে করে বুক চাপড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদি,
কই আসেনা কান্না,  আসেনা।

ঘুম আসেনা।  কিচ্ছু আসেনা। কেউ আসেনা।
দীর্ঘশ্বাসটা বেরিয়ে আসেনা।

আসলেই হয়তো !

শিক্ষকতায় প্রাপ্তি

   ✍️  অভিজিৎ সরকার


অনেক বছর ধরে শিক্ষকতা করে আসছি।

এই শিক্ষকতার মধ্যে থেকে যায়,
 যা বলা যায় না।

কিন্ত আজ দীর্ঘ শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায়,
এমন এক ঘটনা ঘটেছে যা আমার দুটি চোখ ভরিয়ে দিল।

জানিনা এমন কি ছিল তার কথার মধ্যে,
সে এসেছিল আমায় টিউশনের বেতন নিয়ে,

সে তার ব্যাপারে বলছে, আমিও বলছি কত কি।

সে যেন তার জীবনে সফল হতে পারে সেই আশীর্বাদ টুকু করি।

এই ভাবেই প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন তাদের নিজের পায়ে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেই প্রার্থনা প্রভুর নিকট।

কথা বলতে বলতে সে বলে ফেলল যে কাকু, তুমার সেই বকনি, তুমার সেই শাসন, তুমার ওই টিটকারি, তুমার ওই আদর পাব কোথায়?

ঠিক সেই মুহূর্তে আমিও আর কিছু বলে ঊঠতে পারলাম না।

আমার মুখ কিছু সেকেন্ড এর জন্য বন্ধ।

সে চলে গেল কিন্তু আমার চোখের জল টাকে ধরে রাখতে পারলাম না।

শূন্যতা

   ✍️ সম্পা কর্মকার

নির্জন ঘন বনাঞ্চলের মতো সবকিছু অন্ধকারে ঘেরা ।।
কেনো আজ এতো মান অভিমানের পালা ?
কখনো কি ভেবে দেখেছে কেউ...?
সত্যি যদি সে খবর রাখতো কেউ...
তাহলে কি এই শূন্যতা গ্রাস করতো ?
না...
কেউ রাখে না সে খবর ।।
নিজেও যে নিজেকে হারিয়ে ফেলে বারং বার, বহুবার ।।
মনে হয় হারিয়ে যাই দূর থেকে দুরান্তর  ।।
যেখানে থাকবে না কোনো ভয়...
থাকবে না সেই অন্ধকার শূন্যতা নিরন্তর ।।
উদিত হবে নতুন ভোর...
নতুন আলোয় নতুন আশায় ভরে উঠবে অন্তর ।।

........দ্বিতীয় অংশ ।

কাজী নজরুল

    ✍️ অঙ্কিতা বর্ধন

যখন দেখি ,
      হচ্ছে ঝগড়া,
হানাহানি আর হিংসে।
কাজী,
 আমি তোমায় ডাকি,
একাধারে বসে।

যখন দেখি ,
      হচ্ছে অবিচার
নারী জাতির প্রতি।
সাম্য নিয়ে হচ্ছে খেলা ।
কাজী,
      আমি তোমায় ডাকি
একলা ঘরে বসে।

তোমার চোখেই ছিল নজরুল,
 নারী পুরুষ সমান।
তোমার চোখেই ছিল নজরুল,
একি মায়ের দুটি সন্তান
হিন্দু মুসলমান।
ধন্য বটে মোদের জীবন,
কাজী তুমি বাংলার ধন।
তুমি রবে উজ্জ্বল হয়ে
মোদের মনে আমরন।

পূর্ণিমার চাঁদ

   ✍️  কৃষ্ণ দাস

রাতের অন্ধকারে গেস্টাপো আমার প্রিয় চা এর গন্ধ ,
হটাৎ করে মেঘের আড়ালে মুখ লুকিয়ে চাঁদ ,
আমার ঠোঁটে গরম চা এর চুমো।
আমি আমার আমিকে এক নিমিষে ভুলিয়ে দিয়ে... 
এক কাগজেই বারবার রিস্টার্ট করছি।
মনে পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় আলোকিত মানুষদের দেখে,
ভাবী আমি কি একাই এই নির্জন নিহারিকা পৃথিবীতে ?
এক কাপ চা আর গরম সিঙ্গাড়া , অনেক স্মৃতি নিয়ে আসে, অতীতের।
মানুষ পূর্ণিমার চাঁদের মতোই সময় বুঝে আসে।
পরে উধাও হয়ে মিলিয়ে যায় এক সমুদ্রের অতলে।

.......প্রথম অংশ ।

কবিতা

    ✍️কাজী নিনারা বেগম

কি করে  কবিতা তুমি  জীবন কবিতার ছন্দ গুলোকে এলোমেলো করতে হয় তুমি জানো,
জীবন খাতায় পাতাগুলো কে শব্দ চয়ন গুলো অমলিন ভালোবাসার সোহাগী সম্পর্কে জড়াতে তূমি জানো । 
নির্লজ্জ রাতের সহস্র তারার মিট্ মিটে্ আলোর আত্মার ফাক ফোকরে কবিতারা ভাঁজ হয়ে পড়ে থাকে চাদরের কোনায় তুমি জানো,
কবিতারা মাইক্রো ফোনে ষ্টেইজে মধুর কন্ঠে উচ্চ আওয়াজে আবৃত্তি পাঠে নতজানু করতালিতে পাঠকেরা তূমি জানো। 
কবিতা ইচ্ছর ডানাগুলি কে নীল দীগন্তের তেপান্তরের মাঠে ধুধু করা মরুভূমি,
চোরাবালিতে  ভালো বাসার জলপ্রপাতের ভালো বাসার বন্যায় ঘা ভেজাতে তুমি জানো।

ছুঁতে কতদূর?

    ✍️ দিলীপ মালাকার

আমার চলমান জীবন হঠাৎ
কোনো এক ঘুম না আসা রাতে জিজ্ঞাসা করে, 
' গন্তব্যের উড়ন্ত পতাকা ছুঁতে কতদূর ? '

আমি নিশ্চুপ, 
আঘাত করা প্রশ্নের কড়া তাপে ;
ফুরিয়ে যায় শব্দভাণ্ডার
 উত্তর ' দীর্ঘশ্বাসে ' । 

প্রশান্তি

   ✍️ কৃষ্ণ ধন শীল

প্রথমে তাকিয়ে ছিলাম ঐ নীল আকাশ পানে, 
শুভ্র মেঘপুঞ্জের মতন স্বপ্ন জেগেছিল প্রাণে, 
তারপর হঠাৎ কালো যবনিকা করে নিল গ্রাস, 
স্তম্ভিত আমি ভয়ভীত,ভেঙ্গে গেল স্বপ্ন একরাশ।
নব শ্রাবণের ধারার উত্তেজনায় গা ভাসালাম, 
শঙ্কা কাটিয়ে এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেলাম,
বর্ষা যেন বর্ষায় অমৃত কণা দেহ আর প্রাণে, 
সিক্ত হল শুষ্ক আর রিক্ত ধরা নব সুরের গানে। 

ভয়ভীত হলাম আবার পিছোল খাওয়ার ভয়ে, 
হোঁচট খেয়ে পড়লাম ঘুরে কাদার উপর শুয়ে,
পেলাম তখন সোঁদা গন্ধ বৃষ্টি ভেজা দিনের,
ঐ একই সুবাশ আমার ভেজা নির্জীব প্রাণের। 
উঠে দাঁড়ালাম কাঁদা ধুয়ে গেল বৃষ্টির জলে, 
হাসলো মিহির অপরান্হে মেঘেরা গেল চলে, 
তারপর মুছে গেল শুষ্ক কায়ে আমার যত ভ্রান্তি,
নির্ভয়ে পেলাম নীলিমা,স্বপ্ন আর এক প্রশান্তি।

যখন তুমি বলো

   ✍️ মৌমিতা দাস

যখন তুমি বলো, 
যাবে না আমায় কভু ভুলে। 
তখন তোমায় নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো, 
ভেসে ওঠে নয়নের কোলে।। 

যখন তুমি বলো, 
আমায় রেখেছো হৃদয়ে গেঁথে। 
তখন আমার প্রতিটি সকাল বসন্ত সকাল, 
অনন্তকাল থাকি তোমার অপেক্ষাতে।। 

যখন তুমি বলো, 
চিরকাল থাকবে আমার পাশে। 
তখন হাজার তারা ঝিকমিক করে, 
আমার মনের আকাশে।। 

যখন তুমি বলো, 
তুমি শুধু আমায় বেসেছো ভালো। 
তখন আমার হৃদয় মাঝে, 
জেগে ওঠে রাশি রাশি আলো।।

ভক্তের মিনতি

   ✍️ শ্রী রঞ্জিৎ বিশ্বাস

কত স্বপ্ন কত কাজ ভেবে রেখেছি পূরণ করবো বলে,
এটাও জানি তুমি যদি না চাও কোনটাই হবে না কোন কালে।
আমি এই মায়াবী জগতের এক অবুঝ শিশু,
আমি মায়ার টানে আমার স্বার্থে চাইতে পারি অনেক কিছু।
আমি শত পথে যতই চাই তোমার কাছে,
তুমি তাই আমাকে দিও যাতে আমার কল্যাণ আছে।
তুমি যে মহৎ উদ্দেশ্যে এই দুর্লভ মানবজীবন দিয়েছো আমায়,
এই অধম ভক্তকে দিয়ে সেই উদ্দেশ্যে পূর্ণ করো অহেতুকী কৃপায়।
জন্ম-জন্মান্তরে তোমার শ্রীচরণে ঠাঁই যেন পাই,
সাষ্টাঙ্গে এই প্রথম ও শেষ মিনতিটুকু তোমাকে জানাই।

আবার হোক সূর্যোদয়

    ✍️ বিজিত গোস্বামী

উগ্র তামস ভেঙ্গে জয় হোক স্তরের
জয় হোক সংঘাত সংঘর্ষ পরিবর্তনের।

আকাশ কালো মেঘের দলে সতর্ক শিহরণ
নিস্তেজ পৃথিবী ঘুমাও এবার তার কুলে---
শোষণ দমন পীড়ন যাক্ মুছে এবার
ক্ষমা করো তার শত অপরাধ।

দাও সুযোগ একটি বার---
ভোর আলিঙ্গন সূর্যোদয়ে বুলিয়ে বুলিয়ে দাও পরশ
দেখো তুমি কতো সুন্দর।

এই তো জীবন

    ✍️ সংহিতা ভট্টাচার্য

 পৃথিবীটা বড়ই অদ্ভুত !! 
সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলে না! 
ভালোকে ভালো, মন্দকে মন্দ বলে না! 
দুর্দন্ড প্রতাপে শত্রু দমন করে না।


 পৃথিবীটা বড় খেয়ালি 
সুখের ঠিকানায় বাসা বাঁধে না
মুক্ত আকাশে পায়রা ওড়ায় না
স্নেহের পরশে জড়িয়ে ধরে না।

তবুও স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে  
জীবনের গান গেয়ে 
জীবন বয়ে চলে ... 
যোগ বিয়োগের ভুলে 
এক পা দু' পা ফেলে। 

খেলার মাঠ

    ✍️ সুস্মিতা দেবনাথ

ঐ মাঠেতে হতো খেলা।
মাঠটি ছিল বেশ সোহাগা।।
আজ মাঠটি খুবই একা।
এতে জাইনা কাওকে দেখা।।
মোবাইল গেম-এ গড়বন্দি,
আজকের কিছু শিশুরা।
নাচ গান ড্রয়িং ক্লাসে দক্ষ হয় যে তারা।
একটু কথায় রেগে যায়।।
কারণ নেইতো যানা।।
পড়াশোনা চলছে ভালো,
 আর কী চাই, এমনিতেই জীবন আলো।। 
সুস্বাস্থ্য আর সুস্থ মন থাকতে ভালো। 
খেলার মাঠটি নয় কী সেরা?
 তবে চলো দামি মোবাইলে নয়।
শুরুটা হোক খেলার মাঠে।।
তবেই তো পাব ফিরে।
হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো।।
হবেনা কোনো শিশু,
হতাশা আর বিভ্রান্ত।।
খেলার মাঠটি হেসে বলবে।
আমি আজও নয়তো ফাকা।।

মেকি

    ✍️ অসীম দেববর্মা

যতোই বলি না কেনো
  লড়াই তোমার হয়ে
         আমি করি, 
সত্যি বলতে মন মসনদে
         আসীন হলে
অঙ্গীকার নামা পরিযায়ী! 
  যার কথা ভেবে ভেবে
  রাতের পর রাত জাগি 
               কিন্তু, 
সেই আমার অনুভূতির মিছিলে
               অ-সহভাগী। 
                ভালোবাসা 
              বা না-ই বাসো, 
হাসি - কান্না, পাওয়া - না-পাওয়া 
   আনন্দ - বেদনা কালের দান
            তুমি জানো না 
মান - অভিমান ভালোবাসার অভিধান।

উওপ্ত বৈশাখ

    ✍️ সুমিতা স্মৃতি

বৈশাখ তুমি উওপ্ত, প্রখর তোমার উত্তাপ। 
মানবজাতির কাছে তুমি মস্ত এক অভিশাপ।। 

কখনো দাও মাথাফাটা  রোদ,কখনো বা কালবৈশাখী। 
জীবকূলকে নিয়ে আসো তুমি সর্বনাশের মুখোমুখি।। 

নদীনালা শুকনো সব, শুকিয়ে গেছে ভূমি। 
চারিদিকের ধূলোবালি দেখে মনে হয় মরুভূমি।। 

ঘর্মাক্ত শরীর আর ক্লান্ত চেহারা। 
সূর্যের উত্তাপে তখন সকলেই বেচারা।। 

আম, জাম, তরমুজ রসালো সব ফল। 
এসি আর পাখাগুলো'ই গ্রীষ্মের সম্বল।।

তোমার খোঁজে

    ✍️ পৌষালী ভৌমিক

জানিনা সে কেমন দিন,
দেখা হয়েছিল যেদিন।
মরীচিকাকে 'তুমি' ভেবে,
এগিয়ে ছিলাম বহুদূর।
বুঝতে পারেনি অবুঝ মন,
তোমার অস্তিত্ব এখনো যে সুদূর।
ভুল করে 'তুমি' ভেবে জানিনা
কেন বাড়িয়েছিলাম হাত,
বুঝিনি আমি সে যে নও তুমি,
তোমারই প্রতিরূপে 'তুমি' দিয়েছিলে ডাক।
স্বপ্নকে 'তুমি' ভেবে কাছে টেনে নিয়ে,
বানিয়েছিলাম এক স্বপ্নের নদী,
সেই নদী শুখলো আজ,
কেন তা বুঝতে পারিনি আমি।
উত্তাল হাওয়াকে 'তুমি' ভেবে
চেয়েছিলাম করে নিতে নিজের,
ভুল ছিলাম আমি বুঝিনি আগে
তুমি যে নও তো এত কাছের।
কেন 'তুমি' দিলে দেখা বল আমায়,
সবকিছু ভুলে যেতে চাই শুধু জানতে তোমায়।।

আলোর যুদ্ধ

    ✍️ দীপু দেবনাথ 


আজ আমার আলোর প্রয়োজন!
  দিয়ো আমাকে আলো প্রিয় 
  না চেয়েও যেতে হবে যুদ্ধে,
বোঝার ভুলে যুদ্ধ বাঁধে, লালের সমাহার।

ভালোবাসা থাকুক মনে,যুদ্ধ যাক বনে।
পূর্ণিমার চাঁদ এল নেমে,দেখি প্রবাহিনীর গায় 
     জলে জলে মিসে গেল
         পূর্ণ হল তার চলা 
না পারিল যুদ্ধ না পারিল গিরিরাজ করতে তার পথ রুদ্ধ।

        রাস্তা ছিল কত দূর?
         বনের মাঝে খুঁজি 
  খুঁজি আমি অন্ধ, আলোর ঐ শিখা 
কাটা আর ঝোপঝাড় দিচ্ছে যে বাধা।

  যুদ্ধ সঙ্ঘবদ্ধ হতে চাইলে হওয়া যায় 
      প্রাপ্তি রক্ত ঝরা কান্না 
       রক্ত মাখা ঐ পথের মুড়ে 
     রয়েছে পরে প্রাণ হীন খাঁচা!

তোমাকে ভালোবেসে

   ✍️ সুজাতা পাল

তোমাকে ভালোবেসে সম্পূর্ন পাল্টে গেছি আমি
চোখের নীচে যে তিলটা ছিল, সেটাও লাগছে অনেক দামী।

মেঘ মানেই বৃষ্টি আর টানা বৃষ্টি মানেই অনাসৃষ্টি
কিন্তু তোমায় ভালোবেসে এখন মেঘ করলেই মনে হয়
পৃথিবীর সব কপটতা ধুয়ে মলিন হয়ে যাবে
একবার যখন হবে আমাদের শুভদৃষ্টি।

শিশুর কান্না শুনলেই বিরক্তির উদ্রেক হতো আমার
কিন্তু তোমায় ভালোবেসে উপলব্ধি হয় আমার
এই স্বার্থপর জগৎ ছাড়াও অস্তিত্ব আছে অন্য একটি স্বর্গদ্বার এর
যেখানে ঈর্ষা, স্বার্থপরতার নেই কোনো স্থান
ভালোবাসা তার মহত্ব নিয়ে ছুটে চলে দুর্বার।

জীবন সায়াহ্নে পৌঁছেও যেন তোমায় ভালোবেসে যাই
শুধু এই জীবনে নয়, আগামী সাত জনমে ও যেন তোমাকেই পাই।

ভালোবাসার অরন্যরোদন

    ✍️ ডাঃ রূপক পোদ্দার 
-------------------------------------------
     শুধু একটি বার মোরে,   বলো সখি তুমি আমায় ভালোবাসো, তোমায় আর  কোনোদিন বলতে হবে না ভালোবাসো আমায়। 
মরুভূমির এই তপ্ত বালিকনাতে ও আর পা দিতে হবে না কখনো তুমার। 
আমার জন্য তোমাকে আর গভীর রাতে পা দুটি ভিজাতে হবে না গো সখি।
আকাশ,বাতাস আজ শুনোক তোমার মনের প্রতিধ্বনি। সবাই জানোক কেউ তো আমাকে কোনো একটি দিন ভালোবেসেছিল আমায়। আমার হৃদয়ের অন্তরের ডাকে কেউ তো দিয়েছিলো সাড়া। 
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি আর কিছুই চাই নি গো মোর সখি।

বিপর্যয়

    ✍️ রাজেশ ঘোষ

পাহাড়ের কোলে আজ থাকতে ভয় লাগে!
যখন তার নির্মম রূপ দেখি।
আকাশের দিকে তাকাতে ভয় লাগে;
যখন শুনি কালো মেঘের ডাকাডাকি!

বৃষ্টি আজ মনে দেয় না আনন্দ!
প্রতিটি জলবিন্দু মনে হয় এসিডের মতো,
প্রবল বেগে ছুটছে জলধারা
পিছনে রেখে গেছে অসংখ্য ক্ষত।

জীবন আজ বিপন্ন!
আর আমরা ব্যাস্ত মন্দির - মসজিদ নিয়ে,
ভালো করে খুঁজে দেখো
কত মন্দির - মসজিদ গেছে নদীর জলে তলিয়ে।

সদা ব্যস্ত রাজপথ আজ বিলুপ্ত,
কত জনপদ হয়েছে নিশ্চিহ্ন,
মানুষের ঠাই শরণার্থী শিবির
যোগাযোগ হয়েছে বিচ্ছিন্ন।

কত স্বপ্ন বয়ে গেছে নদীর জলে
ভেসে গেছে ঘর বাড়ি,
জনজীবন আজ অবরুদ্ধ
প্রহর গুনছে মহামারী।

বাংলা ভাষায় পড়ি

    ✍️ সুধীর রায়

আমি বাঙালী, বাংলা আমার ভাষা,
বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি হোক,এটাই আমার আশা।
বাংলায় কথা বলি.... বাংলায় গান গাই....
আমার ছেলে মেয়ে বাংলার পাশে নেই!

শিক্ষা দীক্ষায় উচ্চ আসন, গড়বে ক্যারিয়ার!
স্বপ্ন যখন আমার চোখে ভাসছে বারবার,
বাংলা নিয়ে আমি তো আছি!
 ছেলে মেয়ের ক্যারিয়ার গড়ার প্রশ্ন যখন!
বাংলা ভাষা কি দরকার?

আমার তোমার মতো যদি সবাই এমন  ভাবে,
বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি কেমন করে হবে?
আধুনিক বাঙালী মোরা, আধুনিক চিন্তা ধারা!
আমি বাঙালী! 
আমার ছেলে মেয়ে বাংলা ভাষা হারা!

আমার ছেলে মেয়ে পড়বে বাংলা মাধ্যম স্কুলে?
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ছাড়া!
অন্য কিছু?
একটি বার ও ভাবতে পারি না কো ভুলে!

আমি বাঙালী! 
আমার চিন্তা ভাবনা এমন!
বাংলা ভাষা হারিয়ে গেলে, বলো, হবে কেমন?
আগামী প্রজন্ম যদি বাংলা নাহি পড়ে!
বাংলা ভাষা চর্চা তবে, হবে কেমন করে?

আমি বাঙালী! গর্ব করি ভাই!
সন্তানদের ক্যারিয়ার গড়তে ইংরেজী মাধ্যমে পড়াই!
আমার মতো সবাই যদি এমন করে ভাবে,
বাংলা মাধ্যমে পড়ে কার ছেলেটা?
মানুষ হলো কবে?

এমন ভাবনা ভেবে যদি সবাই করো ভুল,
এ ধরায় আর জন্মাবে না রবি, সুকান্ত, নজরুল!
ইংরেজী শিক্ষার প্রয়োজন নেই, সে কথা না বলি-
মুখের ভাষা বাংলা মাকে, কভু যেন নাহি ভুলি।

আমি বাঙালী!
যদি গর্ববোধ করি,
এসো, মুখের ভাষা বাংলা মাকে সন্মান জানাই-
বাংলা ভাষায় পড়ি।

কবিতার কাছাকাছি

    ✍️ সৌরভ শীল

কবিতা লিখতে লিখতে আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি, 
একটা বর্ণমালা কবিতা হতে পারে। 
অথচ ঘোর কাটলে  উগ্রে ফেলি উর্বরতা। 

 একটা নারীর ঠোঁট কবিতাকে চুম্বন করে 
তাকে ঋতুমতী করে একটা ফুটফুটে কবিতার জন্ম দেয়! 
অথচ সে কবিতা নয়, 
আমার তীব্র যন্ত্রণা মাত্র।

ব্যস্ততা

     ✍️ পান্থ দাস

ব্যস্ততার সাথে দিনটা যে কখন কেটে যায়, ভাবনার সময় টুকুও পাইনা ৷ সময়ের সাথে দৌড়াতে দৌড়াতে কখন যে দিন আর রাত হয় বুঝাই যায় না। কিন্তু হাজারো কোলাহলেও খুব মনে পরে ফেলে যাওয়া সময়ের কিছু অসমাপ্ত পৃষ্ঠা ৷ সেও একটা সময় ছিল যখন, ডায়ারির পাতায় ভালো, খারাপ, দুঃখ, ভালোলাগাটা লিখতাম প্রতিদিন কিন্তু, এখন যেন অনুভূতিটাই আর আসে না ৷ হয়তবা একেই দায়িত্ব বলে ৷ সময়ের সাথে নিজেকে হারিয়ে ফেলা বলে ৷ 

অতনুর মতো আমার জীবনটা এত আনন্দপূর্ন ছিলনা ৷ হয়তবা তাই জীবনের বাস্তবিকতা খুঁজে পেয়েছি ৷ অন্যের হাসিতে নিজের হাসি খুঁজে পেয়েছি ৷ পরিস্থিতির চাপে নিজেকে মানাতে শিখেছি ৷ শুধু শিখিনি মানুষের অভিনয় করা কিছু বিশ্বাসঘাতককে চিনতে ৷ ভালোবাসার নাম করে খেলা করা মুখোশধারি ব্যক্তিত্বকে ৷ 

তারপরেও যে চলতে হবে, সময়ে অসময়ে দৗড়াতে যে হবেই ৷ রোদ বৃষ্টি মাথায় করে দায়িত্ব যে সামলাতেই হবে ৷ সুখের সাথে দিনটা না কাটলেও পরিবারের সাথে রাতটা যে ভালো কাতাটেই হবে ৷ হ্যাঁ, এটাই ব্যস্ততার জীবন ৷

মাপ

    ✍️ সুস্মিতা মহাজন 

এক বিন্দু রক্তের দাগ 
ছড়ছে প্রতিনিয়ত, 
হাজারো স্বপ্ন মিথ্যে হচ্ছে
যুদ্ধ চলছে শত।
মাপ চলছে দাঁড়িপাল্লায়
কার দর কত?
এক পাল্লা ভারী বটে,অন্য পাল্লা ছোট।
মাটির উপর চাপ সৃষ্টি করছে যারা,
একদিন বুঝবে কি ছিলো তারা।
দাঁতে দাঁত চেপে আছে মশা, 
আর কিছুটা পরেই মৃত্যু তার দশা।

মা

    ✍️ সৌরভ দেবনাথ

মা মাগো তুমি জননী তুমি জীবন দাতা তুমি আমার শ্বাস,
তুমি বিনে এই পৃথিবীতে নেই কোন আমার আশ্বাস।
মা তুমি ঈশ্বর তুমি ভগবান তুমি আমার সব ,
তোমায় ছাড়া জীবনে আমার লাগে সবই শূন্য পথ।
দশ মাস দশ দিন কষ্ট সয়ে আনলে আমায় এই পৃথিবীতে,
আমি যে তোমার পরম ঋণী শোধ করতে পারব না এই জীবনে।
শাসনে আদরে অতিকষ্টে মানুষ করলে আমায়,
ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি তোমার মতো মা যেন হয় ঘরে ঘরে সবার।
মা যখন ছিলাম ছোট বুঝতাম না তোমার মূল্য খানি,
আর যখন চলে গেলে আমায় ছেড়ে তোমার কথা মনে নিয়ে একা একা কাঁদি।
মা এই জীবনে পারলাম না আমি তোমার সেবা করতে,
আগামী জন্মে গর্ভে নিও এই ঋণ শোধ করাতে।
কোথায় তুমি চলে গেলে কত বহুদূরে! তোমাকে খুজি আমি সারাটিক্ষণে,
একবার এসে ধরা দাও আমার এই জীবনে,
তোমাকে দেখতে মাগো খুব ইচ্ছে করে।
জানি মাগো তুমি আর আসবে না এই ত্রিভুবনে,
তবুও আমি ভালোবাসবো মা তোমায় সারা জীবন ভরে,
মাগো তোমায় জানাই প্রণাম তোমার দু-চরণে,
আশীর্বাদ রেখো মাগো আমার উপরে ।

করোনা

    ✍️ প্রদীপ ভৌমিক

করোনা হতে মুক্তি বহু কষ্টে দুটি বছর হল গত
মাকস ব‍্যবহার ও রেখে সামাজিক দূরত্ব।
বাঁচাতে মূল্যবান জীবন
গৃহবন্দী সকলের মন।
ঝড়ে অশ্রুজল প্রয়ানে আপনজন 
দেখিতে না পাই শেষ কৃত্য সন্তান ও প্রিয়জন।
কর্ম হারিয়ে সর্বস্বান্ত বহু সংসার
জ্ঞানার্জন বিশেষ হল যে সবার।
রাস্তায় আটক বহু শ্রমিক কর্মচারী
স্পেশাল ট্রেনে আসল এসব যাত্রী।
যোগাতে দারিদ্র্যের আহার
বন্টন চাল ডাল শুকনো খাবার।
করোনা ভ‍্যকসিন আসে চিকিৎসায়
সকলে পায় তা বিনা খরচায়।
অনলাইন ক্লাস আর পরীক্ষার নূতন স্বাদ
দরিদ্র ছাত্র ছাত্রী পড়ল তাতে বাদ।
অবশেষে করোনা হতে মুক্তি
সকলে পায় সুখ ও শান্তি।
সবারে করি আবেদন
হাত বাড়ান হতে উন্নয়ন।

থেমে যাও এবার

    🖋 দ্বীপ বণিক

অনেক হয়েছে ধ্বংস লীলা,
স্তব্ধ হয়েছে কতো জীবন।
থেমে যাও এবার প্রকৃতি তুমি;
রক্ষা করো তোমার সৃষ্টির চিরতর।
ভেঙেছে কতো নদীর কূল;
জল ছুটেছে পথ বেয়ে। 
থেমেছে কতো রেল পথ,
স্তব্ধতায় ঘিরে গিয়েছে দৈনন্দিন জীবন। 
নদীর বুকে ঢেউ উঠিলে;
আমার মনেও বাঁধেনা নতুন সুর। 
কোথা হতে যেন হাহাকার শুনি,
বলেছে শুধু এতো কালবৈশাখীর আর্তনাদ।
ছনের ঘরে জল উঠেছে;
নৌকা ডুবেছে মাঝ নদীতে। 
পাহাড়ের বুকে ফাটল ধরিয়ে;
থামিয়ে দিয়েছে গতিময় পথ।
এবার তুমি শান্ত হও;
থেমে যাও এবার প্রকৃতি। 
নতুন ভাবে পৃথিবী সেজে উঠুক;
জরাজীর্ণতা কাটিয়ে নতুন ভাবে।।

মে দিবস

   ✍️ সুমিতা বর্ধন

সকাল থেকে পাড়ার মাইকে মাইকে
মে দিবসের টগবগে রক্তমাখা জয় গান
কোন একদিন আট ঘণ্টা কাজ
আট ঘন্টা বিশ্রাম আর বাকি সময় 
নিজেদের মতো বিনোদন,
এই ছিলো দাবি তাঁদের।
দু-শো বছর পেরিয়েও
আজও ওই শিশুটি ইট ভট্টায় কাজ করে,
বাবুদের প্রাসাদ সম ইমারত গড়তে
ভারী হাতুড়ি মারে বড় বড় ইট-পাথরের গায়ে।
বুড়ো লোকটা আজ ও সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত
ভার কাঁধে ইট বোঝাই করে নিয়ে যায় গন্তব্যে,
পরিবার পরিজনের জন্য
দু-মুঠো খাবার আর হার ভাঙা খাটুনি,
ন্যায্য পাওনা  যে সোনার পাথর বাটি ,
আর, সময়ের হিসাব করা যে বৃথা।
কাজের বিনিময়ে দুটো পয়সা নিলেই
ঘরে জ্বলবে  ভাতের হাঁড়ি।
শ্রমিকদের হাড় জল করা পয়সায়
মিটবে পেটের ক্ষুধা,
হাজার হাজার মাইল পারি দিয়েও
আজো যেনো অর্থহীন মে দিবসের ভাবনা।
আর কতকাল নেতা -মন্ত্রীদের- পিঠ চাপড়ানো ভাষণে আর ফেলে দেওয়া 
উচ্ছিষ্টে মিটবে পেটের ক্ষুধা,
ক্ষুধা পেটে মে দিবসের ভাবনা ?
ভীষণই যেনো এক হাস্য কৌতুক
তার চেয়ে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের দল-
চলো না এগিয়ে যাই হাতে হাত রেখে  আর
অর্ধমৃত মানুষ গুলোর বুকে জ্বেলে দিই গনগনে আগুনের লেলিহান শিখা,
আর কতকাল ঘুমিয়ে কাটবে?
দূরে বাজে ওই বিহগলের সুর
সময় এসেছে মে -দিবসের ভাবনায়
আবারো কিছু নতুন সংকলনের।

মলাট বাঁধানো স্মৃতি

    ✍️ সঙ্ঘমিত্রা নিয়োগী

কুড়োতে থাকি,সে কী নিজেও বুঝিনা
কখনো শৈশব কখনোবা কৈশোর
আঙ্গুলের ফাঁকে দক্ষিণ হাওয়ায়
ঝরে যায়

যেমন দুপুর ফেলে সন্ধ্যেয় পৌঁছে যায় ইতস্ততঃ ডাহুক
 বুক খুলে ভোরের  পাখিরা ওড়ে গেলেও 
 ঘরে ফিরে ---

জীবনের মধ্য রাত্তিরে 
ছেলেবেলার ভুল শোধরানোর   ক্লান্তিতে 
 স্মৃতিরাও বহুদূরে, কষ্ট করেও ভেসে ওঠে না। 

মলাট বাঁধা বিগত দিনগুলো বজ্রাসনে বসেছিল
তাদের ফেলে  শুধু 
   ঋণের অলিন্দে ডুবে যাচ্ছি।

বিরামহীন

    ✍️ অনিমেষ গোপ

মাঠ ফাঁটা তীব্র রোদে,
    দূর অতিদূর অর্থোপার্জনে!

হাসিমুখে বের হয় সকালে,
  এক বুক আশা নিয়ে।

বিরামহীন ভাবে ধরে সংসারের হাল!
দূর-দূরান্তে ছুটে রাখতে হাসি সবার।

ঘরের পরিবেশ ক্লান্তি  করে দূর।
বিরামহীন  পরিশ্রম হয়ে যায় সার্থক।

ঘরের সুপরিবেশ পরিশ্রম তুচ্ছ হয়।
 অর্থ উপার্জনের কষ্ট দ্রবীভূত হয়ে যায়।

হাড়ভাঙ্গা খাটুনি সার্থক তাহার।
তুচ্ছ তাহার কাছে মাঠ ফাটা রুদ্র।

ঘরের পরিবেশ ক্লান্তি সরিয়ে দেয়।
ঘরের পরিবেশ দুরত্ব কমাতে পারে।

সুপরিবেশ বিরামহীন পরিশ্রম তুচ্ছ মনে হয়।
ঘরের পরিবেশ তার কাছে পরম আনন্দময়।

চির প্রণম‍্য ভাষা শহীদ

    ✍️ বিপ্লব গোস্বামী

একাদশ শহীদের বুকের রক্তে
অর্জিত মাতৃভাষার অধিকার,
যে ভাষার জন‍্য কত ভাষাভক্তে
দিয়েছে জান বলিদান বারবার।

কমলা,কানাই,সুকোমল,সচিন্দ্র
সুনীল,সতেন্দ্র,তরণী প্রণম‍্য তারা
হিতেশ,কুমুদ,চণ্ডীচরণ,বীরেন্দ্র,
মায়ের ডাকে জান দিয়েছেন যারা।

একুশের ডাকে বরকত ,সালাম
শফিক,রফিক ,জব্বর আর কত,
আন্দোলনকারী আর কত নাম
শেষ হবে না অগণিত কত শত।

দিয়েছে জান তবু দেয়নি জবান
পরাভূত হয়েছে যত অশুভ শক্তি,
ফিরিয়ে দিয়েছে মায়ের সম্মান
দেখিয়ে দিয়েছে মাতৃভাষা ভক্তি।

ভোগবাদ কি প্রয়োজনীয়?

    ✍️ রাজা দেবরায়


ভোগবাদ যে প্রয়োজনীয় (সাধারণ কিছু ছাড়া) সেটাই আমরা বুঝতে পারতামনা যদিনা ভোগবাদের প্রচারক মূলত বিজ্ঞাপন আমাদের না দেখাতো। দেখায় বলেই প্রয়োজনীয় মনে হয়। না দেখালে জানতামইনা বা ভাবতামইনা আমরা। অর্থাৎ ভোগবাদী হওয়াটা আমাদের জীবনধারণের জন্য প্রধান বা মুখ্য শর্ত নয়। চাহিদা সৃষ্টি করছে এবং করা হচ্ছে পুঁজিবাদের দোসর হয়ে।

এই অবস্থায় আমাদের ভোগবাদ থেকে বেরিয়ে মাথাকে কাজে লাগিয়ে বুঝতে হবে আদৌ কোনটা প্রয়োজনীয় আর কোনটা প্রয়োজনীয় নয়। ট্রেণ্ডি হলে চলবেনা আমাদের। জীবনকে শান্তিময় ও সুখময় করে তুলতে চাইলে ভোগবাদ থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে হবে, কেননা ভোগবাদের কোনো সীমা নেই, শেষ নেই।

তাই ভোগবাদের চক্করে না পড়ে সহজ, সরল, স্বাভাবিক জীবনই আমাদের বেছে নেওয়া উচিত। তা না হলে এর মূল্য আমাদের দিতে হবে এবং বেশ কিছুটা তো দিতে হচ্ছেও।।

স্বপ্ন

    ✍️জয়তী দেবনাথ

স্বপ্নে ঘেরা মনটা যে মোর বড়োই অভিলাষী।
হাজার রঙের স্বপ্ন শুধুই বুনছে রাশি-রাশি।।
স্বপ্নেরা সব বাসা বাঁধে মনের আঙিনায় ।
আর যে শুধুই বায়না ধরে, আকাশ ছুঁতে চায়।।
কতভাবেই বোঝাই তাদের,  কতই হিসাব কষে।
আকাশ যে বড্ড দূরে অচেনা এক দেশে।।
বাস্তববিমুখ মন যে তবু শোনে না কোনো বারণ।
প্রশ্রয় শুধুই দেয় শখেদের কারণে অকারণ।।
কি করে বোঝাই আমি অবাধ্য মনটারে।
না পাওয়া সেই স্বপ্নগুলি কত্ত আঘাত করে।।

একাকিত্ব

    ✍️ সঞ্জয় দত্ত

নির্জনতার মাঝে ছুড়ি মেরে
পালিয়ে গেছে তারাগুলো।
এত যন্ত্রণার মাঝেও নেই কোনো আর্তনাদ!

পথ

    ✍️ অপাংশু দেবনাথ

এখন আর কোনো ব্যস্ততা নেই,পৌঁছাতে হবে প্রেমিকার কাছে বা কর্মকুন্ডলীতে।এখন ভিজতেও বাধা নেই কিংবা চন্দ্রকণিকায় কেউ বসায় না ভাগ।স্বাপদস্বভাবে মাড়িয়ে গেলে হৃদয়-ডিভাইডার,নীরব নয়ন মেলে তাকিয়ে থাকাই শ্রেয়।যত ধুলো জমে সন্ধ্যার আগে, হাওয়া এসে মিহি শব্দে মুছে দেয় শরীর।

চাকার ঘুর্ণন ছাড়া মূল্যহীন, স্থবির এ জীবন।এসো যুগান্তের গতি,এসো আলোকিত সম্ভার।
 
আমি পৌঁছে দেবো সকল সঙ্কটে সময়ের নির্বিবাদ প্রান্তসীমার গান।

আমি ক্ষুধার্ত

    ✍️ শুক্লা চক্রবর্তী

 যে ক্ষুধা নিয়ে রোজ ভাঙ্গে ঘুম আমার, 
সেই ক্ষুধা নিয়েই আমি ঘুমিয়ে পড়ি রোজ রাত। 
দিবারাত্রি আমি কিংবা আমার মতো কত সাথী... 
একটু খাবার আশায় ঘুড়ি কত দরজায় দরজায়, 
পাই যদি কিছু খাবার তবে যদি হয় নিবারণ আমাদের ক্ষুধার। 
ইচ্ছে যে হয় আমাদেরও খেতে সুস্বাদু খাবার, 
তবে যে নেই মোদের এত সামর্থ্য। 
 নষ্ট যে হচ্ছে রোজ কত কত খাবার, 
হচ্ছে তা কুকুর বিড়ালের আহার। 
তবুও কেনো দেয় না যে ওরা, 
আমি কিংবা আমার মতো কোনো ক্ষুধার্তরে ওই খাবার। 
করি আমি তোমাদের সকলের তরে এই নিবেদন... 
  করো না কখনো অন্ন ধ্বংস, 
তাতে তো মা অন্নপূর্ণা হয় যে রুষ্ট। 
আমি কিংবা আমার মতো কত ক্ষুধার্ত, 
একটু খাবার আশায় এইদিক ওইদিক ছুটে বেড়াই ক্ষিধের জ্বালায়, 
তার কখনো রাখো খোঁজ তোমরা। 
   তবে না করে খাবার অপচয়...
ক্ষুধার্তের ক্ষুধা করবে তোমরা নিবারণ, 
করো তবে তোমরা সবে মিলে এই পণ।

দাঁড়াক তবে শিরদাঁড়া সোজা করে

    ✍️ মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য

এই লজ্জা রাখবো কোথায়?
অকাদেমির এতো অধঃপতন দেখে
দাবানলের মতো জ্বলছে কবিতারা।

আগামী প্রজন্মের তীর্যক প্রশ্নবাণে হতাশগ্রস্থ শব্দপ্রেমিক, "হাম্বা বাম্বাও বুঝি যোগ‍্য পথদর্শী?"

ওপারে  রবীন্দ্র,বঙ্কিম,শরৎ,জীবনানন্দ
শব্দের চমকে রচেছিলেন যাঁরা বাংলার ভিত
খুঁজে খুঁজে অস্থির হাম্বা বাম্বার মর্মার্থ।

কলঙ্কিত বাংলার ইতিহাস, ব্রাত‍্যের পরাক্রম
আকাদেমির সার্বভৌমত্ব হরণ।

কলুষিত বাংলা ,বিকৃত মস্তিষ্কে প্রাঞ্জলতার অপহরণ,
দীর্ঘ বছরের সুখ‍্যাতি ভূলুণ্ঠিত,মনের কোণে
তীব্র অভিযোগ,অহসনীয় খ‍্যাপামীতে বিপর্যস্ত শিল্পশৈলী।

চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় নির্লজ্জতা
ক্ষমতায়ন,লোভ আর সততাহীন মানুষদের মুখ।

অপমানিত নোবেলজয়ী ঠাকুর,
দিনে দিনে দুষিত  প্রাণের ভাষা
মেধা মননে তীব্র ক্ষয়, অপদস্থ কলম।

আবেগহীন,দিশাহীন,প্রেরণাহীন কবিতারা
লজ্জায় মুখ লুকায়,গুমরে মরে নির্জনে।

অথচ লোভী বুদ্ধিজীবী! গর্ববোধে 
হাসে নির্লজ্জের হাসি। পৃথিবীর কোণায় কোণায়
যার তিরস্কার,লজ্জায় অবনত শির।

রাজনীতির নক্কারতার ঘটুক অবসান
আকাদেমী হউক সততা আর জ্ঞানের পূজারী,
আগামীর সমুখে  দাঁড়াক সোজা শিরদাঁড়া নিয়ে।

ইহকাল-পরকাল

    ✍️ কানু বনিক

সত‍্যি করে বলতো তুই রাঙ্গামাটির পথ ছুঁয়ে যাস নি,
আমি কিন্তু তাঁর পাশেই ছিলাম ;
আমি ঠিক বুঝতে পারি নি, 
বটবৃক্ষের নিচে ছিলাম ধ‍্যানে মগ্ন,
বৃষ্টিরা আলতো ছুঁয়ে গেছিলো আমার স্বপ্ন;
ঠিক তখনই তোর নিঃশ্বাস পড়েছিল আমার অলিন্দে,
আমার ধ‍্যান ভেঙ্গে গেল,
চমকে উঠলাম 
দেখতে পেলাম, দ্রাঘিমা বরাবর তোর চলে যাওয়া;
স্নিগ্ধ রেখাতেই তোর থমকে যাওয়া
এই শতাব্দী কি কারো খেয়াল রাখে?
নিজেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়,
না হলে ইমনের খেয়ালে চূর্ণ-বিচূর্ণ এই স্বরলিপি,
এই বিশাখা তোকে না কতবার বলেছি
গোলাপের পেছনে ছুটবি না,
বনফুলই আজকাল সবার খেয়ালে 
এতেই চলে মাঙ্গলিক বোঝাপড়া,
শুধু জেনে নিতে হয়,
আকাশ প্রদীপটা আর কতটুকু আলো দিয়ে যাবে,
যদি সীমানা ছাড়িয়ে একটু এগিয়ে যাওয়া যেতো,
সবার মাঝে বেঁচে থাকাটা একটু অন‍্যরকমের অনুভূতি
বসন্ত কি শুধু তোর মনের ভেতর?
আর কি কারোর নেই?
জানি সেতো কোনো বাঁধা মানে না,
তবুও একটু বুঝে শুনে চলতে হয়;
অনেক তো হলো বসন্ত বসন্ত খেলা
এবার না'হয়  একটু মাটি ছুঁয়ে কথা বলা,
একটি বার সত‍্যের মুখোমুখি হয়ে দেখতো
কঠিন হলেও অনেকটা আনন্দের;
সংকীর্ণতার পেছনে না দৌড়ে 
বাকী সময়টা পরব্রহ্মের জন‍্য উজাড় করে দিস,
ইহকালে কিছু না হলেও পরকালে অনেককিছু পেয়ে যাবি।

ভালোবাসা.com

   ✍️ গোপাল বনিক

আচ্ছা বলতো ,তোকে যদি ভালোবাসি তার বিনিময়ে তু্ই কি দিবি!
উত্তর : সারাদিন পেছনে লাগা, আর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ঝগড়া।
উত্তর শুনে আহত বাঘের মতো চিৎকার করে উঠি।
এক দন্ড শান্তি আর নির্ঝঞ্ঝাট প্রেমের কোনো সংজ্ঞা নেই বুঝি!
মুচকি হেসে বলে : তা পরে দেখা যাবে।

আমরা প্রতিদিন এখন হোয়াটস্যাপে তর্কযুদ্ধ করি।
আমি তো পুরুষ, মার পেঁচের কাঁটাকুটি খেলায় রোজ হারি।
ওপারে তখন যুদ্ধ জয়ের খিল খিল হাসি।

কবে যে বসন্ত বিকেল আসবে
তর্কযুদ্ধ ছেড়ে দুজনে বসবো কোন এক পড়ন্ত বেলায়।
সূর্যাস্তের টলটলে রঙে মাখামাখি হয়ে -
সেইদিনও তুই শুধু বলবি , আমি শুনবো।

কালবৈশাখী

    ✍️ রেহানা বেগম হেনা

কালবৈশাখী তুমি এসো ভয়ঙ্কর ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করে,
তুমি এসো ,আমফান ,যশ এর গতিকেও পেছনে ফেলে, প্রলয়ঙ্করী, বিনাশকারী হয়ে।
তুমি সব কিছু ভেঙ্গে তছনছ করে দাও-
আমার দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম।
গুড়িয়ে দাও, চূর্ণবিচূর্ণ করে দাও, ভাসিয়ে নিয়ে যাও-
দেশের যতো নোংরা ধর্মের ভেদাভেদ, হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ।
ধূলিসাৎ করে দাও মৌলবাদের ভিত, দেশের যতো ভ্রষ্টাচার , দুর্নীতি,অন্যায় অবিচার।
ভাসিয়ে নিয়ে যাও- নারী বিদ্বেষ, মানুষ রূপী ধর্ষক।
ঝড়ের বেগে বয়ে এনো পুরুষে নারীতে সমতা, সমানাধিকার, মানবতা, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব বোধ।
তোমার ঝড়ের তাণ্ডবের ছোঁয়া যেন লাগে সব মানুষের গায়।
স্কুল কলেজ থেকে অফিস আদালত,
শিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত, ধনী গরীব, কৃষক শ্রমিক, মেহনতি দিনমজুরের মস্তিষ্ক ছোঁয়ে যাক তোমার পরশ।
কালবৈশাখী তোমার ঝড়ের প্রথম তাণ্ডবে, প্রথম বিদ্যুৎ চমকে, বৃষ্টির প্রথম ফোঁটায় যেন এদেশের মানুষের মস্তিষ্কে নতুন চেতনার কুঁড়ি ফোটে।
সমস্ত কুসংস্কার তুমি ধোয়ে মুছে পরিষ্কার করে দাও।
বিজ্ঞান মনষ্ক হয়ে উঠুক তোমার শীতল হাওয়ার দোলায়।
ক্ষতি করো না তুমি কৃষকের ফসলের মাঠ, 
কেড়ে নিও না স্বজন, 
ভেঙ্গে দিও না গরীব, মেহনতি, বস্তিবাসীদের সুখের গৃহখানি ।
অক্ষত রেখো আমার দেশের সকল মানুষের সুন্দর হৃদয়খানি।

সন্ধান

    ✍️ মৌসুমী গোয়ালা

অবাঞ্ছিত আবির্ভাব মৃত্যুদূতের
গহীন অবসন্ন চেতনাবোধ,
প্রত্যক্ষ পরিচয় মৃত্যুর সাথে
অকস্মাৎ ব্যাধির নির্দয় আঘাতে।

মর্ত্যধূলিতে অবাঙ্মুখ গহ্বর
অন্তহীন অন্তর্হিত স্বর,
পার্থিব মৃদু বর্তিকায়
আত্মার শিখা চিরন্তন প্রজ্জ্বল।

জীবনবীণার সুরের প্রাণস্পন্দনে,
ধূলোমলিন সিক্ত টানাপোড়নে,
মর্তলোক ছাড়ে শরীর
অবিশ্বাস্য আত্মার দীপ্তির সন্ধানে।

মৃত্যুর রসহ্য উন্মোচনে
বার বার আসা ফিরে,
অবিনশ্বরতায় আস্তাশীল থাকা,
অভিজ্ঞতার খনিগর্ভ অন্ধকার জেনে।

বাণী

    ✍️ চন্দন পাল

স্বজনের ভালবাসায় ভাললাগায়, 
আঙ্গুলে তোমার ছোঁয়া অনুভব করি।
এবার জিভে এসে বস মা কটা দিন ।
আমি নিঁখুত নই, তোমারই অতিনগন্য সন্তান,
পারো কী  ফিরায়ে মুখ।
 একলব্য! জীবন তোমারই অপযশ । 

জিভে এসে বস কটা দিন।
 কাঁটাজিভ ছুটে ---
বুঝতে না বুঝতে একে একে সব যায় দূর। 
অথচ যা চাইনা তাই কেন শুনে যায় স্বজন!

 যা চেয়েছি তার চেয়েও  দিয়েছো বেশি
আর কটা দিন, আশ্রয় সাশ্রয় বাঁধা থাক।
 সব সুখ ওপারে ! মন থেকে দূরে যাক। 

সত্য আজ বহুদূর

    ✍️ চিন্ময় রায়

   মিথ্যেবাদীর দুনিয়াতে আজ সত্য বহুদূর,
 বিপদ হইতে বাঁচতে মোরা রাতকে বানাই ভোর।
 চারিদিকে চেয়ে দেখি মিথ্যের জয় সর্বত্র,
 মনে রেখো এ মিথ্যের জয় ক্ষনিকের এইমাত্র।
 সব লোকেরাই বিপদেতে আজ মিথ্যে কথা বলে,
 মিথ্যে বলে আবার তারা ফাঁসে নিজের জালে।
 ভালোবাসা আজ ক্ষনিকের প্রায়,
 মিথ্যে প্রতিশ্রুতি।
 সেই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবার,
 পার পেয়ে যায় কত মহারথী।
 ভালোবাসা হইতে কর্মক্ষেত্র_
 সবেতেই মিথ্যের বসবাস।
 এ দুনিয়ায় সত্যের চেয়ে মিথ্যেবাদীর চাষ।
 বাঁচতে গেলে মিথ্যের আশ্রয়,
   সত্য হয় লাঞ্ছিত।
 এই কারণেই লোকের- মানসিকতার জন্ম নেয় বিকৃত।

মায়াময় ভালোবাসা

    ✍️ ইমরান খান রাজ 

আমায় ডেকে নিও, 
কোন এক সূর্যাস্তে। 
দু'জনে নদী তীরে বসে, 
কাটাবো সময়। 

আমায় ডেকে নিও, 
কোন এক বর্ষায়। 
দু'জনে খোলা মাঠে, 
করবো বৃষ্টিস্নান। 

আমায় ডেকে নিও, 
কোন এক জোছনায়। 
দু'জনে মেতে উঠবো, 
মায়াময় ভালোবাসায়।

যদি একবার

    ✍️ পৃথ্বীশ দত্ত 

একবার যদি তুমি বলো 
একদিন ভালো বাসবোই,
আমি বহু রূপে বারে বারে 
পৃথিবীতে আসবোই ।

একবার যদি তুমি বলো 
একদিন দেখা হবে তেপান্তরে
আলো হয়ে রাজপথ 
খুলে যাবে অন্তরে অন্তরে।

একবার যদি আসো নীড়ে 
একদিন অতি অল্পক্ষণ 
নীড়গুলো হয়ে যাবে ত্বরিতে
শত শত প্রাসাদ-উপম,

একবার যদি তুমি বলো
শেষদিনে ব্যথার পাহাড়ে- 
এসো তবে স্বর্গ গড়ি আজ 
প্রত্যয়ের বিবিধ বাহারে ।

অন্তত একবার শেষবার বলো-
প্রেমকেই  সত্য বলে জানি !
আমার হৃদয়ে এই বীজমন্ত্র 
এই তবে সভ্যতার শ্রেষ্ঠতম বাণী ।