আত্মহত্যা


                   ✍️ রিপন সিংহ রায় 

ওগো নিকুঞ্জনা, তুমি যে আমার হৃদয়ের নক্ষত্র,
যে নক্ষত্র আজ হৃদয় মেঘে ঢেকে গেছে
পালিজাত ফুলের ঘ্রাণ
মৃত্যুর মুহূর্তের মতো ম্লান
ওগো প্রিয়ে, তুমি যে আমার দ্বিতীয় জন্ম।
আমার সমস্ত সুন্দর শুধু তোমার কাছেই ফুটে ওঠে,
যে অঙ্গে পবনকে স্পর্শ করতে দেইনি
যে অঙ্গে সূর্যের আলোকে তাকাকে দেইনি
কেন সরে যাও দূরে
আমার হৃদয়কে একা রেখে!

তোমার চোখে আমি আমার পুরু পৃথিবীকে খুঁজে পাই,
হৃদয়ের হৃদয় স্পর্শে
সমস্ত দিনের দুদণ্ড শান্তি ছিলে
সবই ভেসে গেছে কোন এক অন্ধকার ঢেউ 'এ।
পৃথিবী আজও তার পুরোনো পথে ঘুরে,
কিন্তু তুমি তোমার পুরোনো পথ ভুলে গেছ
মিশে গেছ নতুন এক সাগরের ঢেউ 'এ
আমিও সন্ধ্যা নামিয়ে
মৃত্যুর পথে -- ভাবি এগিয়ে যায়
অন্ধকার ঢেউ 'এ।

তোমার রজনী মালার মতো মোটা দড়ি 
সুশান্ত রেলের সরু পথে
অমৃতের মতো কত শিশির বোতল
নক্ষত্রের মতো যৌবন খেলা করে।
ওই দিন হবে সুখের দিন আমার
যেদিন পৃথিবীর বুকে সন্ধ্যা নিয়ে
নক্ষত্র জেগে থাকবে আকাশের বুকে
সেই নক্ষত্র জুঁই ফুলের মতো
 আমারে ঢেকে রাখবে;
নরগীর বুক থেকে আমি ক্ষয় হয়ে যাবো।

লাশ কাটার ঘর থেকে 
শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ঘ্রাণ, 
তোমার চোখে অপ্রকাশিত আনন্দের ম্লান;
হরিণের মাংসের মতো ---
তবুও হৃদয় যে জীবন্ত
হয়তো হৃদয় জুড়ে তোমার নাম।
ক্ষয় হয়ে যাবে,
রয়ে যায় আমার ভস্ম
তাও টেনে নিয়ে যায় অন্ধকার সাগরের ঢেউ 'এ
পৃথিবীর বিপরীত প্রান্তে।

পৃথিবীর সমস্ত মানুষ -- মানুষী মরে গেছে আজ,
শুধু আমিই জীবন্ত হয়ে
মরে যাওয়া নক্ষত্রের নীচে
তার চুলের মতো রূপালী অন্ধকার বুকে
তবুও আমি বেচেঁ আছি আজ
তারে ভালোবেসে ।
একদিন সমস্ত মায়ার দড়ি কেটে দিয়ে,
তার সঙ্গে
রস রঙ্গে
চলে যাবো আমি নিকুঞ্জ বনে।
হয়তো একদিন গভীর বাতাসে 
তুমি আবার জ্বলে ওঠবে,
আমি জানি তোমার সেই ভিজে ঠোঁট 
আজও আমারে ডাকে;
যদি সন্ধ্যার মোহনায় নয়
তবুও যেন রাত্রির শেষে ফিরে পাই এ পথে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ