✒️সুখময় মুড়াসিং
পরমানন্দ স্বীকৃত কর্মচারী সংগঠনের রাজ্যস্তরের নেতা।সংগঠনের কাজই তার ধ্যান জ্ঞান একাজে বিন্দুমাত্র অবহেলা তার কাছে হারাম । অনেকেই তাকে যেমন তাত্বিক বলে থাকেন তেমনি আড়ালে গোঁয়ার ও বলেন।তিনি অনেকের যেমন প্রিয় তেমনি অনেকের চক্ষুশূল । নির্বাচনের এক বছর আগে স্বউদ্যোগে রাজ্য চষে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট জমা করে বলেছিল -- "পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে সময় থাকতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক" । মুষ্টিমেয় নেতা ইতিবাচক হলেও সিংহভাগ নেতাই ফুৎকারে উড়িয়ে বলেছিল -- "হাতিকে চামচিকার ভয় দেখানো"। তার আশঙ্খা ই সঠিক হল, নির্বাচনে ভরাডুবির পর সব নেতা কর্মীরাই বাড়ী ছাড়া হল তিনিও বদলির অপেক্ষায় রইলেন।
"কয়লা ধুলেও ময়লা যায়না," নতুন জায়গায় সংগঠনের নাম না করে নিজের মত করে আড়ালে কাজ চালিয়ে যাতে লাগলেন। স্ত্রী নিয়মিত ফোন করে দিনে কয়েকবার খুঁজ খবর নিত, নানা পরামর্শ দিত তিনিও নিয়মিত মাসে দু'বার বাড়িতে আসতেন।অশনি সংকেতের কালো মেঘ ধীরে ধীরে জমতে লাগল ! কয়েক মাস যেতে না যেতে স্ত্রী, সংসারের প্রতি উদাসীনতা ও অবহেলার অভিযোগ আনতে লাগল।পরমানন্দ হাজারো বুঝিয়েও ব্যর্থ হতে লাগল,স্ত্রীর একই কথা-- অন্যরাও পার্টি সংগঠন করে তাদের স্ট্যাটাস আর তোমার স্ট্যাটাস দেখ ? আকাশ পাতাল পার্থক্য। তাদের কাছাকাছি বদলি হল আর তোমার তিন জেলা পার করে রাজ্যের শেষ প্রান্তে , ওরা নতুন নেতাদের সঙ্গে দহরম মহরম করে চলছে আর তুমি ? পরমানন্দ বিস্মিত হলেও ঠান্ডা গলায় বুঝানোর চেষ্টা করে - কে কি করছে তা না ভেবে এস আমরা আমাদের মত থাকি,তাতে মঙ্গল হবে। স্ত্রী ঝংকার দিয়ে বলে - তোমার সঙ্গে সংসার করে কি পেলাম ,কি দিয়েছ ? সংসারের ঘানি টানতে টানতে ভাটির টান শুরু হল, আর তুমি গায়ে হওয়া লাগিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। চুপ থাকাই শ্রেয় তাই পরমানন্দ মুখে কুলুপ এঁটে পুরনো দিনগুলি'র কথা ভাবছে। স্ত্রী জানত রাজনীতি তার প্রাণ ধ্যান জ্ঞান,কিন্তু নানা ছলনা করে পার্টির কাছে মিথ্যা প্রেমের অভিযোগ করে বিয়ে করতে বাধ্য করে ছিল , তখন কথা দিয়েছিল তোমার কাজে আমি কোন দিন বাধা দেবনা। কথা রাখল কই! বিয়ের পর সংসার চলছেনা বলে চাকরি করতে চাপাচাপি শুরু করল, নিরুপ্তাপ দেখে নিজেই নেতাদের বাড়ী বাড়ী ঘুরে চাকুরী জোগাড় করে আনল। রাজনীতির ক্যরিয়ার নষ্ঠ হলেও মেনে নিয়েছিল, সংসারের সুখের জন্য আজ হঠাৎ......। "আমরা করব জয় নিচ্ছয়" এই আদর্শে দিন গুনতে লাগল কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাত , নৈতিক অধ:পতনের অভিযোগে সংগঠন থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হল। আধ: বা কোথায় হল আর পতন বা কি করে হল জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তাই যা হবার তাই হল। আসনিমা মধ্য গগনে শনির চক্র শিয়রে, মহিলা কমিশনের নোটিশ! স্ত্রীর অভিযোগ মানসিক নির্যাতন আর সাংসারের প্রতি উদাসীনতা। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বেকসুর খালাস,পরমানন্দ আবারও বলল - "এস আমরা আমাদের মত থাকি,তাতে মঙ্গল হবে"।
0 মন্তব্যসমূহ