সুভাষীনি

 ✍️ সুখ চন্দ্র মুড়াসিং (সুখময়)

                         সুভাষীনির সুবাসে কিছু পুরুষ লোকের  জিহ্বা লক লক করলেও সুভাষীনি মচকাবে তবু ভাঙ্গবেনা।  ভাঙ্গবেই বা কি করে , যৌবনের শুরুতেই সংঘাতিক ভুল করে ভেঙ্গে ছিল।একমাত্র মেয়ে সমাদরেই বড় হয়েছে , পড়াশোনা মোটামুটি ভালো রাজধানী শহরের নামী মহাবিদ্যালয়ে অনার্স নিয়ে পড়তে আসার কয়েক মাসের মধ্যে এক সুঠাম সুপুরুষ যুবকের প্রেমে পড়ে ভাসতে লাগল। যুবকটি পরিপাটি সাজে দামী গাড়ী চালিয়ে সুভাষীনিকে নিয়ে দূর ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ত,দামী রেষ্টুরেন্টে দামী খাবার খাওয়াতো, বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিত।সুভাষীনি উদ্বেল প্রেমে মরমে গেলেও যুবকটি নিরুত্তাপ ! সুভাষীনিকে বুঝিয়ে বলত "বেশী পাগলামি করোনা পড়াশুনার ক্ষতি হবে", আগবাড়িয়ে কখনো হাত বাড়ায়নি দু'য়েকটি চুমুর মধ্যেই সংযত থাকত।                                                     এই ব্যবহারেই সুভাষীনি আরো দুর্বার হয়ে পড়ল, ফাইনাল পরীক্ষার পরদিনেই সুভাষীনির  চাপাচাপিতে যুবকটি কোর্ট ম্যারেজে বাধ্য হল। মা বাবা যখন জানতে পারলো তখন সুভাষীনি দু'মাসের অন্তঃসত্ত্বা।মা বাবার দুঃখ হল _ স্বাধীন বাংলাদেশে মানিয়ে নেওয়ার বহু চেষ্টা করেও যখন অসম্ভব হয়ে উঠল তখন খালি হাতেই এদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। অনেক কায়িক পরিশ্রমের ফলে আজ একটু থিতু হতে পেরেছে , কিন্তু মেয়েটি ; কন্যা সম্প্রদান করে এক ফোঁটা আনন্দ অশ্রু ফেলতে দিলনা !                                      খোঁজ  নিয়ে জানাগেলো ছেলেটি ড্রাগ পাচরকারি , লোকচোখে ধুলো দেবার জন্য মেয়েটিকে ব্যবহার করত। সুভাষীনির চাপাচাপিতে যুবকটি সব স্বীকার করে বলল : এ পথ থেকে সে ধীরে ধীরে সরে এসে অন্য ব্যবসা শুরু করবে । দ্বিতীয় সন্তান যখন পেটে তখন সুভাষীনির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল!  অভয়নগর ব্রিজের নিচে স্বামীর ক্ষত বিক্ষত নিথর দেহ পড়ে আছে ! জমানো টাকায় কয়েক বছর টেনেটুনে সংসার চালানোর পর স্থানীয় এক নেতার সাহায্যে ডিম সাগরের পাড়ে টং দোকানে সকল দূপুর চা টিফিন সন্ধ্যায় তেলে ভাজার ব্যবসা শুরু করল।নেতার হাত যখন মাথার উপরে তখন চিন্তা কিসের ? মাঝে মধ্যে রাতের অন্ধকারে নেতা বাবুকে দৈহিক দক্ষিণা দিতে হয় তাতে কি , যৌবন এখনও ঢলে যায়নি!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ