✍️রেহানা বেগম হেনা
বয়স আশি ছুঁইছুঁই এক বৃদ্ধের স্যাঁতসেঁতে ঘরের ছাল ওঠা দেয়ালে টাঙ্গানো দেশের কবেকার তেলচিটে ফুটিফাটা এক মানচিত্র!
দরজায় খোলামেলা কপাটের শিরা-উপশিরায় আলতো
ছুঁয়ে যায় মৃদুমন্দ হাওয়া,
সে হাওয়ার আবেগী দোলায়
এদিকওদিকে নড়ে ওঠা কম্পিত সময়ের আলপথে হোঁচট খায় মানচিত্রের বিদগ্ধ দৃষ্টি,হয়তো আর ক্ষতিকর সম্ভবনা নেই।
অশীতিপর স্থির চাউনিতে লক্ষ্য রাখে,পলক ফেলতেই বাতাসে জোর লাগে,রূপ নেয় ঝড়ো বৈচিত্র্যের।
বেয়াড়া পূর্বাভাসের লুকোচুরি খেলায় নড়েচড়ে বসার চেষ্টা বৃদ্ধের,
সাদা চুলে কোঁচকানো অভিজ্ঞতায় নতজানু বয়সের চৌকাঠে আত্মসমর্পণ বাধ্যতায়।
চোখের সামনে বেমক্কা হাওয়ার গতি দুমড়ে মুচড়ে দেয় মানচিত্র,
খেই হারা সুতোয় নামেমাত্র ভরে দেয়ালের খানাখন্দে ঝুলে থাকে।
বিবর্ণ রূপের স্মৃতিপাতা যেন আরো বিবর্ণ,শতছিন্ন।
নবাগতদের উদ্দেশ্যে শেষ বারের মতো বৃদ্ধের কম্পিত কণ্ঠে চিৎকার আসে,
নিমেষে ছুটে আসা সস্নেহ পুত্র প্রপৌত্রর দল..
সম্মিলিত চেষ্টার আন্তরিকতায়
কাঠি,সুতো,আঠা,নতুন কাগজে আবারও সেজে ওঠলো -উঠলো মানচিত্র।
ঠকঠকে হাতের লাঠি যেতে যেতে বলে গেলো---
সবে খেয়াল রেখো ঐ অর্বাচীন হাওয়ার কপাটের পানে,
দমকা মুহূর্ত হাওয়া যেন আর কখনো না টানে।
ভেজা আকাশ লুকিয়ে রেখো না দু-চোখের পাতায়,
হাজারো বিপত্তি আসুক থেকো না মহাশূন্য বুকে পথ হাঁটায়।
0 মন্তব্যসমূহ