বিয়েবাড়ি

✒️সুদীপ চক্রবর্তী

বড়লোকের বাড়ি, বিয়ের জমজমাট উৎসব;
হাজার লোকের আয়োজনে ব্যস্ত আছে সব।
ব্যান্ড পার্টির বাজনার তালে বাড়িটি গমগম,
বাড়িতে আজ হবে হাজার লোকের সমাগম।
কাজে কর্মে নাচে গানে বিভোর বাড়ির সবাই,
বিরহী হয় কনের হৃদয় শ্রবণে বিয়ের সানাই।
পুরুষেরা আছে সক্রিয় 
বাহিরের সব কাজে,
মহিলাগণ কাজের ফাঁকে মত্ত আছে সাজে।
মাছ-মাংস-পনির-পোলাও চলছে আয়োজন,
ত্রুটি কিছুই রাখেন নি আর যা যা প্রয়োজন।
কনের বাবার যেমন অর্থ তেমনই হৃদয়বান,
উদার হস্তে মেয়ের বিয়ের খরচ করতে চান।
প্রথাগত কাজে ব্যাপৃত মাতা থাকেন নিরবে,
অন্তরে ভীষণ কষ্ট মেয়েটি বাড়ি ছেড়ে যাবে।
পাড়াতে সবার সুসম্পর্ক পরিবারটির সাথে,
তাইতো সবাই বিয়েবাড়ির আনন্দেতে মাতে।
দিবসের তৎপরতা শেষে সন্ধ্যা নেমে আসে,
নানানরকম আলোর বন্যায় বিয়েবাড়ি ভাসে।
অতিথি অভ্যাগতরা ধীরে আসতে শুরু করে,
বরের অপেক্ষায় আছে সব সাজগোজ সেরে।
বিয়ে বাড়ির গেটে হঠাৎ পৌঁছায় বরের গাড়ি,
বরের সাথে আসে শতাধিক বরযাত্রীর সারি।
বাজনা বাজে, সানাই বাজে, সাথে উলুধ্বনি,
বরণডালায় বরণ করতে আসেন বাড়ির গিন্নি।
দিনেকের রাজা বর বাবাজি বসেন রাজাসনে,
মালাবদল আর সাতপাক বাঁধে দম্পতি দুজনে।
পরিজনেরা আপ্যায়নে রত অতিথি অভ্যাগতে,
খাবার টেবিলে জোরহাতে, চেয়ে নেবেন পাতে।
মহাভোজ শেষে তৃপ্ত সকলে, কর্তা খুশির ছন্দে;
বিবাহানুষ্ঠান আদ্যন্ত সম্পন্ন, সুষ্ঠুভাবে মহানন্দে।
পর দিবসে, বিদায়বেলায় বিষাদের সুর বাজে,
মা-মেয়েতে করুন কান্না, সকলে অশ্রুতে ভিজে।
গানটি শ্রবণে পিতার হৃদয় বেদনায় যায় ছেয়ে,
"তুই যে আমার পুতুল পুতুল সেই ছোট্ট মেয়ে.."
বরের হাত ধরে, নিজঘর ছেড়ে, শশুরবাড়ি যাত্রা;
বেদনা অধীর বাড়িটিরও যেন যন্ত্রণা অতিমাত্রা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন