২৩ বছর পর

©️ দেবব্রত চক্রবর্তী

দিন যায়' আর ফিরে আসে না। এই তো সে'দিন বট গাছটার নীচে বট পাতায় পত্র লিখে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম 'সাথী'কে।'সাথী' লজ্জায় দৌড়ে চলে গেলো ক্লাস রুমে, উত্তর দেয় নি সে।কি লাজুক মেয়েটা। সবে মাত্র দশম শ্রেনীর টগবগে যুবতী আর আমি দ্বাদশে।ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কতবার দেখার জন্য ঘুরতাম এদিক ওদিক। দুর হতে দেখলেই কেমন জানি লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিতো মেয়েটা। আমি থাকতে পারছি না আর। কত দিন পর উত্তর আসবে কে জানে? স্কুলের সাত ঘন্টা, একটা ফুরফুরে মেজাজ কাজ করতো আমার। যত ভালোবাসা তত আবেগ।লাস্ট পিরিয়ড টা খুব কষ্টের হত,এযেন বিসাদ বেলা।আর একটু থাকতে পারলে হয়তো ভালো হতো। আরও একটু দেখতে পারতাম তার লাজুক মুখ।কেন যে এই নিয়ম তৈরি করলো স্কুল কর্তৃপক্ষ,কিছুই জানি না।আমি যেদিন শিক্ষা মন্ত্রী হবো সেই দিন থেকে সারা দিন স্কুল থাকবে। তখন আর কষ্ট হবে না আমার। এমন উদ্ভট সব চিন্তা করতে করতে আজকে আবার সামনে এল সাথী, কালো চুল কুঁচকানো চেহারা,লাল ঠোঁট কালো হয়ে গেছে তার।আমাকে দেখে সামনে আসছে,আজ যেন আর লজ্জা নেই তার। আমি ও কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে হকচকিত হয়ে নিজেকে সামলিয়ে নিলাম।কিছু একটা বলবে হয়তো সে,,,,

সেই বট পাতায় পত্র লেখা আজ প্রায় ২৩ বৎসর।আমার বয়স এখন চল্লিশ,সাথীর হবে হয়তো সাত'ত্রিশ। তেইশ বছর পর সাথী আমার সামনে এই ভাবে চলে আসতে দেখে বুঝা গেল কিছু একটা বলবে, সাথী;- "দিনের বেলা স্বপ্ন না দেইখ্যা বাজারে যাও,বাজার করতে হইবো,ঘরে কুছতা নাই।খালি ভাত কেমনে খাইবা।কাম নাই কাজ নাই খালি বিড়ি ফুক্কায় আর খাতাত কবিতা লেখলে দিন যাইতো না।" আমি আবার হঠাৎ হকচকিয়ে দেখলাম,আরে্ এসাথীই তো আমার বউ। ধুর কি চিন্তা করতাছিলাম। 'অঁ যাই গো যাই বাজারো যাই। তুমার লিগ্যা কিতা আনতাম!'

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ